Mukhtar Ansari

মুখতারকে বিষ প্রয়োগ করে ‘খুন’ করা হয়েছে, দাবি পুত্র উমরের, বললেন, ‘আদালতে যাব’

গত ১৯ মার্চ নাকি মুখতারকে রাতের খাবারের সঙ্গে বিষ দেওয়া হয়েছিল, এমনই দাবি করলেন উমর। এই ব্যাপারে তাঁরা বিচার বিভাগের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানান তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ০৮:০২
মুখতার আনসারি।

মুখতার আনসারি। — ফাইল চিত্র।

গ্যাংস্টার-রাজনীতিবিদ মুখতার আনসারির মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র উমর দাবি করলেন, ‘‘আমার বাবাকে ধীরে ধীরে বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছিল!’’ তিনি দাবি করেন, তাঁর বাবাকে খাবারে বিষ দেওয়া হয়েছিল। সেই খাবার খেয়েই মৃত্যু হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, উমর জানান, মুখতারের মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আদালতে যাবেন।

Advertisement

বাবার মৃত্যুর খবর প্রশাসনের তরফে তাঁদের জানানো হয়নি বলেও দাবি করেন উমর। তাঁর কথায়, ‘‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু বলা হয়নি। আমি সংবাদমাধ্যম থেকে বিষয়টি জানতে পারি।’’ এর পরই তিনি বলেন, ‘‘দিন দুয়েক আগেও আমি তাঁর (মুখতার আনসারি) সঙ্গে দেখা করতে জেলে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। বিষ দেওয়ার অভিযোগের ব্যাপারে আমরা আগেও যা বলেছি, এখনও একই কথাই বলব।’’

গত ১৯ মার্চ নাকি মুখতারকে রাতের খাবারের সঙ্গে বিষ দেওয়া হয়েছিল, এমনই অভিযোগ করেছেন উমর। এই ব্যাপারে তাঁরা বিচার বিভাগের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানান তিনি। মুখতারের কথায়, ‘‘বিচার বিভাগের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’’

বৃহস্পতিবার হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মুখতারের। জেল সূত্রে খবর, রমজানের উপবাস ভঙ্গ করার পরেই মুখতারের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। বান্দা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুনীল কৌশল জানান, পেটের যন্ত্রণা নিয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর সেখানেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মুখতারের। যদিও মুখতারের ভাই গাজিপুরের সাংসদ আফজল আনসারি অভিযোগ তুলেছেন, তাঁর দাদাকে জেলের মধ্যেই বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলা হয়েছে। একই অভিযোগ শোনা গেল ছেলে উমরের গলাতেও। শুক্রবার ময়নাতদন্তের পর মুখতারের দেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তার পরই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে বলে জানান উমর।

মখতারের মৃত্যু নিয়ে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরা। অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম)-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, ‘'মুখতার প্রশাসনের বিরুদ্ধে বার বার গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তাঁকে বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করতেন। সরকার তাঁর চিকিৎসার দিকে কোনও মনোযোগ দেয়নি।’’ একই কথা বলেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা আমিক জামেই। তিনি মুখতারের মৃ্ত্যুর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। একই দাবি কংগ্রেস নেতা সুরেন্দ্র রাজপুতেরও।

৬০ বছর বয়সি মুখতার উত্তরপ্রদেশের মৌ সদর বিধানসভার পাঁচ বারের প্রাক্তন বিধায়ক ছিলেন। ২০০৫ সাল থেকে উত্তরপ্রদেশ এবং পঞ্জাবের জেলে বন্দি ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ৬০টিরও বেশি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন ছিল। তিনি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন আদালতে আটটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বান্দা জেলে বন্দি ছিলেন। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ গত বছর যে ৬৬ জন গ্যাংস্টারের তালিকা প্রকাশ করেছিল, তাতেও নাম ছিল মুখতারের। সম্প্রতি ৩৬ বছর পুরনো এক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন মুখতার। সেই মামলায় তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত।

আরও পড়ুন
Advertisement