নরেন্দ্র মোদী (বাঁ দিকে) এবং রাহুল গান্ধী। — ফাইল চিত্র।
ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশে পরপর সভা করেই চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবারের পরে মঙ্গলবারেও সে রাজ্যে বিজেপির চারটি প্রচারসভায় বক্তৃতা করলেন তিনি। কংগ্রেস এবং রাহুল গান্ধীকে তীব্র ভাষায় আক্রমণে পাশাপাশি ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ বার বার নিজের নাম করে ‘সাফল্যের প্রচার’ করতে শোনা গেল তাঁকে।
বেতুলে বিজেপির সভায় মোদী মঙ্গলবার বলেন, ‘‘কংগ্রেস জানে না, মোদী কোন মাটিতে তৈরি। ওরা বলেছিল, কোনও দিন তিন তালাক রদ হবে না, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা উঠবে না, অযোধ্যার ওই জমিতে রামমন্দির নির্মাণ করা যাবে না। সবগুলো কাজ আমি করে দেখিয়ে দিয়েছি। দেশের মানুষ জানেন, মোদী মানে গ্যারান্টি (প্রতিশ্রুতি) পূরণের গ্যারান্টি।’’
সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ভোটের প্রচারে মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ স্লোগান এবং ‘চিন বিরোধী পদক্ষেপ’ নিয়ে খোঁচা দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘আমাদের দেশের মানুষের হাতে হাতে এখন চিনা মোবাইল।’’ ওই মন্তব্যকে নিশানা করে রাহুলের উদ্দেশে মোদীর মন্তব্য, ‘‘মুর্খদের সর্দার জানেনই না, মোবাইল উৎপাদনে ভারতের স্থান এখন বিশ্বে দ্বিতীয়। ভারত এখন এক লক্ষ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের মোবাইল ফোন রফতানি করে।’’
শাজাপুরের সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কংগ্রেস এখন অনুন্নয়ন আর সর্বনাশের সমার্থক।’’ আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাবুয়ায় তাঁর বক্তৃতায় এসেছে তফসিলি জনজাতিগুলির উন্নয়নে কেন্দ্রের ২৪ হাজার কোটি টাকার বিশেষ কেন্দ্রীয় উন্নয়ন প্রকল্পের কথা। বস্তুত, ভোটের মধ্যপ্রদেশে গিয়ে সে রাজ্যের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের ‘জনমুখী প্রকল্পের’ চেয়েও মঙ্গলবার মোদীর বক্তৃতায় বেশি প্রাধান্য পেয়েছে সর্বভারতীয় রাজনীতি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সাফল্যের প্রসঙ্গ।
আগামী ১৭ নভেম্বর (শুক্রবার) এক দফাতেই মধ্যপ্রদেশের ২৩০টি বিধানসভা আসনের সবক’টিতে ভোট। বুধবার প্রচারের শেষ দিন। তার আগে শেষবেলায় সব দলের কেন্দ্রীয় নেতারাই ঝাঁপিয়েছেন প্রচারে। মোদীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও মঙ্গলবার মধ্যপ্রদেশে প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গেও জনসভা করেছেন ভোটমুখী রাজ্যে।
২০১৮-র বিধানসভা ভোটে জিতে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস ক্ষমতা দখল করলেও দেড় বছরের মাথাতেই জ্যোতিরাদিত্যের সাহায্যে দু’ডজন বিধায়ক ভাঙিয়ে কমল নাথের সরকারের পতন ঘটিয়েছিল বিজেপি। বিদিশায় কংগ্রেসের সভায় সেই প্রসঙ্গ তুলে রাহুল বলেন, ‘‘কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিধায়ক কিনে বিজেপি মধ্যপ্রদেশের জনতার রায় অসম্মান করেছে বিজেপি। এ বার মানুষ তার জবাব দেবেন। কংগ্রেস দেড়শোর বেশি আসন জিতে সরকার গঠন করবে।’’