Manipur Clash

মণিপুরকাণ্ডের প্রভাব পড়ল মিজোরামেও, মেইতেইদের রাজ্য ছাড়ার ডাক, নিরাপত্তা আঁটসাঁট করল সরকার

শুক্রবার একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মণিপুরের নারী নির্যাতনের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরেই মিজো যুবকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন। ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ মেইতেইদের রাজ্য ছাড়তে বলা হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
আইজল শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৩ ১৩:২৬
Meitei’s in Mizoram get security cover after an organization’s leave state call

—প্রতীকী ছবি।

মণিপুরকাণ্ডের প্রভাব পড়ল পড়শি রাজ্য মিজোরামেও। প্রায় তিন মাস কুকি এবং মেইতেইদের মধ্যে গোষ্ঠীসংঘর্ষে উত্তপ্ত রয়েছে মণিপুর। এ বার মিজোরামে বসবাসকারী মেইতেইদের রাজ্য ছাড়ার ডাক দিল ‘পামরা’ বলে একটি সংগঠন। যদিও সংগঠনটির তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে মেইতেইদের রাজ্য ছাড়ার ‘আর্জি’ জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে এ-ও জানানো হয়েছে যে, মেইতেইদের উপর এর পর কোনও অত্যাচারের ঘটনা ঘটলে দায়ী থাকবে তারাই। এই বিবৃতির পরেই মেইতেইদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিজোরাম সরকার।

শুক্রবার সংগঠনটির তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, মণিপুরের নারী নির্যাতনের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরেই মিজো যুবকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন। তাই তাদের নিজেদের ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ই মেইতেইদের রাজ্য ছাড়তে বলা হয়েছে। তার পরেও ‘অপ্রীতিকর’ কিছু ঘটলে মেইতেইরাই দায়ী থাকবেন বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। মিজোরাম প্রশাসনের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বিবৃতিটি প্রকাশ্যে আসার পরেই দ্রুত পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। মেইতেইদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিছু দিন আগেই মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের সঙ্গে টেলিফোনে একটি কথোপকথনে রাজ্যে বসবাসকারী মেইতেই জনগোষ্ঠীর মানুষদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছিলেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা। প্রসঙ্গত, মূলত অসম এবং মণিপুরে বসবাসকারী মেইতেই জনগোষ্ঠীর একাংশ মিজোরামেও বসবাস করেন।

Advertisement

প্রসঙ্গত, বুধবার সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মণিপুরের একটি ভিডিয়ো ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে দেশ জুড়ে। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরাচ্ছে উন্মত্ত জনতা। যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ওই দুই মহিলার মধ্যে এক মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয় বলেও অভিযোগ। মণিপুর পুলিশের দাবি, ছবিটি গত ৪ মে তোলা।দুই নির্যাতিতার এক জন ইতিমধ্যেই গত ৪ মের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, খুনের ভয় দেখিয়ে দুষ্কৃতীরা সে দিন তাঁদের জনসমক্ষে পোশাক খুলতে বাধ্য করেছিল। সেই ঘটনায় গত ১৮ মে সাইকুল থানায় ‘জ়িরো এফআইআর’ দায়ের করে খুন, ধর্ষণ-সহ একাধিক অভিযোগ এনেছিলেন নির্যাতিতা। অভিযোগ আনা হয়েছিল ৮০০ থেকে ১০০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় সশস্ত্র দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। কিন্তু সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো ছড়িয়ে না পড়া পর্যন্ত পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ।

মণিপুরের ওই ঘটনায় দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মণিপুরের গোষ্ঠীহিংসার সূচনা পর্বেই দুই মহিলা গণধর্ষণ এবং হিংসার শিকার হলেও ৭৭ দিন পরে কেন পুলিশ সক্রিয় হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। বিরোধীদের দাবি, ঘটনার কয়েক দিন পরেই এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। মণিপুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে পুলিশ চাইলে ওই ছোট্ট এলাকার মধ্যে আরও দ্রুত অপরাধীদের ধরে ফেলতে পারত বলেও দাবি বিরোধীদের।

আরও পড়ুন
Advertisement