দিল্লিতে বিজেপির বিক্ষোভে পুলিশের জলকামান। ছবি: পিটিআই।
মেয়র নির্বাচন ঘিরে দিল্লি পুরসভায় আম আদমি পার্টি (আপ) এবং বিজেপি কাউন্সিলরদের সংঘাত এ বার ‘নেমে এল রাজপথে’। তার জেরে সোমবার কার্যত অচালবস্থা তৈরি হল রাজধানী দিল্লিতে। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে জলকামান ব্যবহার করতে হল দিল্লি পুলিশকে। ঘটনার ফলে দেশের রাজধানী অঞ্চলে এ বার নতুন করে রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা।
গত শুক্রবার যুযুধান দু’তরফের কাউন্সিলরদের হাতাহাতির জেরে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল দিল্লি পুরসভায় মেয়র নির্বাচন। প্রতিবাদে সোমবার বিজেপির সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছিল আপ। তার ‘জবাবে’ আপ প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বাড়ির সামনে বিক্ষোভের ডাক দেয় বিজেপি। প্রায় ২,০০০ বিজেপি নেতা-কর্মী কেজরীওয়ালের বাড়ির দিকে মিছিল করে যেতে চাইলে তাদের পথ আটকায় পুলিশ। তৈরি হয় উত্তেজনা। উত্তেজিত বিজেপি কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ।
২৫০ আসনের দিল্লি পুরনিগমে ডিসেম্বরের গোড়ায় পুরভোটে ১৩৪টি ওয়ার্ডে জিতেছিল কেজরীওয়ালের আপ। ক্ষমতাসীন বিজেপি নেমে আসে ১০৪-এ। ৯টি ওয়ার্ডে জেতেন কংগ্রেস প্রার্থীরা। তবে দিল্লির মেয়র নির্বাচনে সেখানকার রাজ্যসভার ৩ জন ও লোকসভার ৭ জন সাংসদ এবং ১৪ জন বিধায়কেরও ভোটাধিকার রয়েছে। যার অর্থ, মোট ২৭৪টি ভোটের মধ্যে যে দল ১৩৮টি ভোট পাবে, সেই দলের প্রার্থীই মেয়র পদে জয়ী হবেন। অঙ্কের হিসাবে ১৩৪ জন কাউন্সিলর, রাজ্যসভার ৩ জন সাংসদ এবং ১৩ জন বিধায়কের ভোট আপের পক্ষে রয়েছে। অর্থাৎ, সকলে ভোট দিলে ১৫০টি ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচনে আপের প্রার্থীরই জেতা উচিত।
অন্য দিকে, বিজেপি পুরভোটে পেয়েছে ১০৪টি আসন। পরে এক জন নির্দল কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া লোকসভার ৭ সাংসদ ও এক জন বিধায়কের ভোট পাচ্ছে বিজেপি। সে ক্ষেত্রে সব মিলিয়ে পুরসভায় এই মুহূর্তে নরেন্দ্র মোদীর দলের শক্তি ১১৩। কিন্তু অঙ্কের হিসাবে জয় অসম্ভব হলেও পদ্ম-শিবির মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ায় নতুন করে অশান্তি তৈরি হয়েছে দিল্লিতে। অন্য দিকে বিজেপির অভিযোগ, তাদের দু’জন কাউন্সিলরকে শুক্রবার হেনস্থা করেছেন আপ কাউন্সিলররা।
শুক্রবার অধিবেশনের সূচনায় বিতর্ক তৈরি হয় দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা মনোনীত তদারকি স্পিকার সত্য শর্মার ভূমিকায়। বিজেপি নেতা সত্য মেয়র ভোটের আগে মনোনীত পুর সদস্যদের (অল্ডারম্যান) নাম শপথগ্রহণ করাতে গেলে বাধা দেন আপ সদস্যেরা। দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর আগেই ১০ জনকে মনোনীত সদস্য হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। তিনি বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই এ কাজ করছেন বলে অভিযোগ তুলেছিল আপ। ভোটে জয়ী আপ সদস্যদের শপথের আগেই শুক্রবার সত্য এক মনোনীত সদস্যকে শপথ নিতে ডাকলে সভায় তৈরি হয় প্রবল উত্তেজনা। সোমবার আপ নেতৃত্ব প্রশ্ন তোলেন দিল্লি সরকারকে এড়িয়ে কী ভাবে লেফটেন্যান্ট গভর্নর ১০ জন অল্ডারম্যান নিয়োগ করে তাঁদের মেয়র নির্বাচনের ভোটাধিকার দিতে পারেন।