মণিপুর হিংসার একটি ছবি। —ফাইল চিত্র।
মণিপুর হিংসায় এ বার আগুন জ্বলল রাজ্যের এক মন্ত্রীর গুদামঘরে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ রাজ্যের জনস্বাস্থ্য, কারিগরি এবং ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী এল সুসিন্দ্র মেইতেইয়ের বাড়ি সংলগ্ন একটি গুদামঘরে আগুন লাগিয়ে দেন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এমনই জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, আর একটি গুদামেও আগুন লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন দুষ্কৃতীরা। তবে কাঁদানে গ্যাসের সেল ছুড়ে বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইম্ফল পূর্ব জেলার চিঙ্গারেল এলাকায় ওই মন্ত্রীর গুদামঘর। মণিপুর হিংসায় গৃহহীনদের অস্থায়ী আস্তানা তৈরি করার জায়গা পরিদর্শন করতে শুক্রবারই ওই এলাকায় গিয়েছিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। তার পরই ওই এলাকায় হামলা চলে। মনে করা হচ্ছে, এই হামলার নেপথ্যে কুকি জঙ্গিরা রয়েছেন। উল্লেখ্য যে, মণিপুরে শান্তি ফেরাতে শনিবারই সব দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠকের আগেও মণিপুর থেকে অশান্তির খবর আসতে থাকায় কেন্দ্র এবং রাজ্য, উভয় সরকারই অস্বস্তিতে।
মণিপুরে যুযুধান মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠন ইতিমধ্যেই বিজেপি পরিচালিত রাজ্য সরকারের প্রতি প্রকাশ্যে অনাস্থা প্রকাশ করেছে। এই পরিস্থিতিতে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হতে পারে বলে জল্পনা রয়েছে। যদিও শুক্রবারের বৈঠকে এমন সম্ভাবনার কথা খারিজ করে দিয়েছে কেন্দ্র। প্রসঙ্গত, গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।
মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষ ঠেকাতে গত ৬ মে মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। নামানো হয় সেনা এবং অসম রাইফেলস বাহিনীকে। সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকির ভার দেওয়া হয়েছে সিআরপিএফের প্রাক্তন প্রধান কুলদীপ সিংহকে। তাঁর অধীনে এডিজিপি (ইন্টেলিজেন্স) আশুতোষ সিংহ সমগ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার ‘অপারেশনাল কমান্ডার’ হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিন্তু তাতেও তেমন ফল মেলেনি।