মণিপুর হিংসার একটি ছবি। —ফাইল চিত্র।
১২ সদস্যবিশিষ্ট মণিপুর মন্ত্রিসভার একমাত্র মহিলা সদস্য রাজ্যের কাংপোকপি কেন্দ্রের বিধায়ক নেমচা কিগপেন। বুধবার তাঁর বাড়ি জ্বালিয়ে দিলেন দুষ্কৃতীরা। অবশ্য সে সময় নিজের বাড়িতে ছিলেন না মন্ত্রী। তাই প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। বুধবারের এই ঘটনার পরে অনেকেই মনে করছেন মণিপুরের জাতিগত হিংসায় সাধারণ মানুষ তো বটেই, নেতা-মন্ত্রীরাও সুরক্ষিত নন। মন্ত্রীর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই সংলগ্ন অঞ্চলে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ এবং সেনা।
উল্লেখ্য যে, বুধবার কাংকোপপি জেলাতেই জাতিগত হিংসায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন অন্তত ১০। গত ৩ মে থেকেই উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে কুকি এবং মেইতেই জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ এবং সংঘর্ষ চলছে। শান্তি ফেরাতে রাজ্য এবং কেন্দ্রের তরফে একাধিক পদক্ষেপ করা হলেও এখনও সমাধানসূত্র মেলেনি। মণিপুরের উপত্যকা অঞ্চলে বাস করা মেইতেই জনগোষ্ঠী জনজাতি তকমার দাবি জানানোর পরেই তার বিরুদ্ধে সরব হয় কুকিরা। জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত কুকিদের অভিযোগ, রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। পাল্টা মেইতেইদের দাবি, কুকিদের জন্য তাদের অধিকার খর্ব হচ্ছে।
মণিপুর প্রশাসন সূত্রে খবর, নেমচা রাজ্যের দশ কুকি বিধায়কের মধ্যে এক জন, যাঁরা স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন। তাই তাঁর বাড়িতে হামলার পিছনে মেইতেইদের হাত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেনা সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই দফায় দফায় সংঘর্ষ শুরু হয় কাংপোকপি জেলার খামেনলকে। মেইতেইরা খামেনলক, চুল্লোউফাই ও আইগেজাং গ্রামে আক্রমণ চালায়। তিনটি গ্রামের প্রায় সব বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। চলে গুলি। পাল্টা গুলি চালায় কুকিরাও। যে দেহগুলি এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা গিয়েছে, তাতে যেমন গভীর ক্ষত দেখতে পাওয়া গিয়েছে, তেমনই পাওয়া গিয়েছে বুলেটের দাগও।