(বাঁ দিক থেকে) বিজেপির দেবেন্দ্র ফডণবীস, শিবসেনার একনাথ শিন্ডে এবং এনসিপির অজিত পওয়ার। ছবি: পিটিআই।
মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ। কিন্তু তার পর থেকেই মহারাষ্ট্র তো বটেই, জাতীয় রাজনীতে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, কে বসবেন মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে? দৌড়ে রয়েছেন দু’জন। দেবেন্দ্র ফডণবীস এবং একনাথ শিন্ডে। মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ে অজিত পওয়ারের এনসিপিও বড় ভূমিকা নিতে পারে। মহারাষ্ট্রে সেই আলোচনার মধ্যেই ‘মহাজুটি’র তিন নেতা রবিবার মুম্বইয়ের তিন প্রান্তে জয়ী দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন। অনেকের মতে, তিন বৈঠক আলাদা আলাদা হলেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু একটাই। মুখ্যমন্ত্রী পদ।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, রবিবার মুম্বইয়ে নিজের বাসভবনেই বিজেপির কোর কমিটির বৈঠক ডেকেছেন ফডণবীস। বান্দ্রাতে এক হোটেলে দলের জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠকে বসছেন শিন্ডেও। অন্য দিকে, নিজের বাড়িতেই এনসিপি নেতাদের নিয়ে বৈঠক করবেন অজিত। তার পর সব শিবিরই সোমবার একত্রিত হবে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সোমবারের বৈঠকেই ঠিক হতে পারে মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম।
সূত্রের খবর, রবিবারের পৃথক পৃথক বৈঠকে ঠিক হতে পারে বিধানসভায় তিন দলের পরিষদীয় দলনেতার নাম। শুধু তা-ই নয়, মুখ্যমন্ত্রী পদে কে বসবেন, নিজেদের মধ্যে সেই আলোচনাও হবে। এখন দেখার, শিন্ডে কি মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ছাড়বেন না কি ফডণবীসেরা নতুন কোনও কৌশল ভাবছেন? বছর দুই আগে শিন্ডেকে সামনে রেখে শিবসেনায় বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন বেশ কয়েক জন বিধায়ক। শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি জোট ভেঙে বেরিয়ে আসেন শিন্ডে। হাত মেলান বিজেপির সঙ্গে। বদলায় সরকার। শুধু শিবসেনায় নয়, পরে ভাঙন ধরে এনসিপি-তেও। কাকা শরদ পওয়ারের সঙ্গ ছাড়েন ভাইপো অজিত। তিনিও উঠে পড়েন ফডণবীস ও শিন্ডের ‘নৌকা’য়। সেই সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন শিন্ডে। দুই উপমুখ্যমন্ত্রী ফডণবীস এবং অজিত।
পাঁচ মাস আগের লোকসভা ভোটের ক্ষত মেরামত করে বিধানসভা নির্বাচনে ভাল ফল করেছে বিজেপি। ২০১৯ সালে ২৩টি আসনে জয়ী হলেও ২০২৪ সালে মহারাষ্ট্রের মাত্র ৯টি লোকসভা আসনে পদ্মফুল ফুটেছিল। অনেকেই মনে করেছিলেন, বছর শেষে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনেও হারতে হবে পদ্মশিবিরকে। কিন্তু ভোটপণ্ডিতদের ভুল প্রমাণিত করে বিজেপি একাই মহারাষ্ট্রে ১৩২টি আসনে জয় পায়। অনেকের মতে, পাঁচ মাসের ব্যবধানে বিজেপির এই উত্থানের নেপথ্যে কারিগর ফডণবীসই। এই ফলের পর বিজেপির অনেক নেতাই মনে করছেন, শিন্ডের উচিত নিজে থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ছেড়ে দেওয়া। অন্য দিকে, এনডিএ জোটের বিপুল জয়ের নেপথ্যে শিন্ডেই প্রধান ভূমিকা নিয়েছেন, এমন দাবি তুলে প্রচারে নেমেছে শিবসেনাও। শেষ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের রাজনীতি প্রেক্ষাপট কোনদিকে বাঁক নেয়, সেটাই দেখার।