রাজ ঠাকরে এবং একনাথ শিন্ডে। ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)-র প্রধান রাজ ঠাকরের সঙ্গে দেখা করলেন শিন্ডেসেনার অন্যতম সেনাপতি সদা সরবণকর। মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের ঘনিষ্ঠ বিধায়ক সরবণকর বুধবার দুপুরে রাজের সঙ্গে ‘রাজনৈতিক পরিস্থিতি’ নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে এমএনএস সূত্রের খবর।
রাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে সরবণকর বলেন, ‘‘ওঁর (রাজ) সম্প্রতি অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাই আমি তাঁর সঙ্গে সৌজন্যসাক্ষাৎ করতে এসেছি। তা ছাড়া আমরা তো কাছাকাছিই থাকি।’’ প্রসঙ্গত, দু’জনেই মুম্বইয়ের মাহিম এলাকার বাসিন্দা। সরবণকর মাহিমেরই বিধায়ক। যদিও শিবসেনার প্রধান উদ্ধব ঠাকরের তুতো ভাই রাজের সঙ্গে শিন্ডে শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ নেতার এই বৈঠক ঘিরে মরাঠা রাজনীতিতে নতুন জল্পনা তৈরি করেছে।
উদ্ধবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে সমর্থক বিধায়কদের নিয়ে বিজেপির ‘হেফাজতে’ গুয়াহাটির হোটেলে ডেরা বাঁধার পর থেকেই শিন্ডের সঙ্গে রাজের ধারাবাহিক যোগাযোগ ছিল বলে দুই শিবিরের তরফে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, নিজেদের ‘আসল শিবসেনা’ বলে দাবি করা শিন্ডে শিবিরের একাংশ মনে করছে, বালাসাহেবের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার দাবির জন্য ‘ঠাকরে’ পদবির উপস্থিতি জরুরি। তাই তাঁরা চাইছেন রাজকে সঙ্গে পেতে। সে ক্ষেত্রে আগামী ভোটে এনসিপি-কংগ্রেস-উদ্ধব জোটের মোকাবিলা করা সহজ হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
ঘটনাচক্রে, গত কয়েক মাসে বিজেপিরও অনেকটাই কাছাকাছি এসেছেন রাজ। সাম্প্রতিক সময়ে লাউডস্পিকার বিতর্কে কট্টর হিন্দুত্ববাদী অবস্থান নিয়েছেন রাজ। গত মাসে বিধান পরিষদ নির্বাচনে রাজের দলের একমাত্র বিধায়ক বিজেপি প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছিলেন। স্পিকার নির্বাচন এবং আস্থাভোটেও বিজেপি-শিন্ডেসেনার পক্ষ নিয়েছে এমএনএস।
প্রসঙ্গত, বালাসাহেবের জীবদ্দশাতেই ২০০৬ সালে তাঁর প্রিয় ভাইপো রাজ শিবসেনার সঙ্গ ছেড়ে নিজের দল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) গড়েছিলেন। বালাসাহেবের নামে কোনও অভিযোগ না করলেও উদ্ধবের ‘নেতৃত্বগুণ’ নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন রাজ। ২০০৯-এ মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটে ১৩টি আসনে জিতে চমকে দিয়েছিল রাজের দল। ২০১২-য় বৃহন্মুম্বই পুরসভার ভোটে এমএনএন জেতে ২৭টি ওয়ার্ডে। কিন্তু কট্টরপন্থী অবস্থান এবং হিংসাত্মক আন্দোলনের কারণে ক্রমশ মরাঠা রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন রাজ। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ফের বালাসাহেবের বিদ্রোহী ভাইপোর রাজনৈতিক পুনরুত্থানের সুযোগ দিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতির বিশ্লেষকদের একাংশ।