বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফে। — ফাইল চিত্র।
বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফেতে বিস্ফোরণের ঘটনায় এক বিজেপি কর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ), এমন খবর ছড়িয়ে পড়তেই কর্নাটকের রাজ্য-রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়। এ বার এই খবরের সত্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিল বিজেপি। শুধু বিজেপি নয়, এনআইএ-ও প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে।
বিজেপির দাবি, কংগ্রেস শাসিত কর্নাটকে এ ভাবে ভুয়ো খবর ছড়ানো খুবই দুর্ভাগ্যজনক। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দীনেশ গুন্ডু রাওকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি এক জন সাক্ষী এবং অভিযুক্তের জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে পার্থক্য জানেন না।
বিস্ফোরণের ঘটনায় বিজেপি কর্মীর নাম জড়ানোয় বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার দীনেশ এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ প্রশ্ন তুলেছিলেন, রাজ্যের বিজেপি কর্মীরা এ বার কী বলবেন? দীনেশ বলেন, “এনআইএ-র হাতে এক বিজেপি কর্মীর গ্রেফতার হওয়ার অর্থ অনেক কিছুই স্পষ্ট করে দিচ্ছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এর পর কি আর কিছু বলবেন?” বিজেপির দাবি, তদন্তকারী সংস্থা কোনও বিজেপি কর্মীকে আটক বা গ্রেফতার করেনি।
শুক্রবার জানা যায়, ক্যাফে বিস্ফোরণের ঘটনায় সাই প্রসাদ নামে এক বিজেপি কর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। এই বিস্ফোরণকাণ্ডে দুই সন্দেহভাজনের সঙ্গে যোগ ছিল এই বিজেপি কর্মীর। গত সপ্তাহে শিবমোগায় তল্লাশি অভিযান চালায় এনআইএ। সেই সময় সেখানকার এক মোবাইলের দোকান এবং দুই সন্দেহভাজনের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় তদন্তকারী দলটি। মোবাইলের দোকানের দুই কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় বিজেপি কর্মী সাই প্রসাদের নাম উঠে আসে বলে দাবি করা হয়েছিল।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এনআইএ একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘‘কোনও খবর যাচাই না করে এ ভাবে ছড়ানো হলে তা মামলার তদন্তে বাধার সৃষ্টি করে। সাক্ষীদের পরিচয় প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় তদন্ত সমস্যার মুখে পড়ে।’’
এনআইএ আরও দাবি করেছে, মুসাভির হুসেন শাজিব এবং আব্দুল মাথিন তাহা নামে দুই সন্দেহভাজনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি ফোন উদ্ধার করা হয়। সেই ফোন যে দোকান থেকে কেনা হয়, সেখানে তল্লাশি চালানো হয়। দোকানের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারী অফিসারেরা জানতে পারেন ওই ফোন সাই প্রসাদ বিক্রি করে দিয়েছিলেন। পরে সেই ফোনই ওই দোকান মালিক মুজ্জামিল শরিফের কাছে বিক্রি করেছিলেন। এই মুজ্জামিলকে বিস্ফোরণ মামলায় গ্রেফতার করেছিল এনআইএ। মুজ্জামিল এই ফোনের মাধ্যমেই মুসাভির এবং মাথিন তাহার সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলেও দাবি করে তদন্তকারী সংস্থা। উল্লেখ্য, গত ১ মার্চ রামেশ্বরম ক্যাফেতে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণ ঘটাতে আইইডি এবং টাইমার ব্যবহার করা হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। দুই মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেছে এনআইএ।