Durga Puja 2022

বলিউডের পুজোয় বাংলার ঢাক, গায়ক অভিজিতের কথায় লালুর দলের ৪২ কাঠিতেই দেবীর বোধন

মুর্শিদাবাদ থেকে লোখান্ডওয়ালার দূরত্ব কমে যায় পুজোর সময়ে। মুম্বইয়ে অভিজিতের বাড়ির পুজোয় রজতজয়ন্তীর জন্য অনেক প্রস্তুতি ছিল লালুদের। কিন্তু করোনা ভেস্তে দিয়েছিল। এ বার সুদে-আসলে তোলার পরিকল্পনা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২২ ১৬:৫৪
লোখান্ডওয়ালার মণ্ডপে লালু দাসেরা।

লোখান্ডওয়ালার মণ্ডপে লালু দাসেরা। নিজস্ব চিত্র।

কলকাতায় পুজো আর পঞ্জিকা মেনে আসে না। আসলে বাঙালির তর সয় না। মহালয়া যেতে না যেতেই জ্বলে ওঠে আলো, বেজে ওঠে মাইক। ঢাকেও কাঠি পড়ে যায়। কিন্তু বাংলার বাইরে এখনও পুজো আসে পঞ্জিকা মেনেই। যেমন গায়ক অভিজিতের বাড়ির পুজো। এ বার ২৭ বছরে ভট্টাচার্য বাড়ির পুজো। আর তার বোধনে বেজেছে এই বাংলা থেকে যাওয়া ২১ ঢাক। মুর্শিদাবাদের বিখ্যাত ঢাকি লালু দাসের নেতৃত্বে ২১ জনের দল পঞ্চমীতেই পৌঁছে গিয়েছে মুম্বই। আর ৪২ কাঠির বোলে ষষ্ঠীতে হয়েছে দেবীর বোধন। মুম্বই থেকে গায়ক অভিজিত আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘আমাদের পুজোয় অনেক কিছুই আছে। অনেক জাঁকজমক থাকলেও বাংলার ঢাকই আসল চমক।’’

Advertisement

দীর্ঘ দিন ধরে এই পুজোর নিয়মিত ঢাকি বেলডাঙার বাঁশচাতর গ্রামের বাসিন্দা লালু। কিন্তু গত দু’বছর বড়ই কষ্টে কেটেছে। ২০২০ সালে অভিজিতের পুজোর রজত জয়ন্তী পালনের জন্য লালুও অনেক আগে থাকতে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। দলবল ঠিক করে রেখেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত করোনার কারণে পুজোয় যাওয়াই হয়নি। গত বছর পুজো হলেও সে ভাবে মজা পাননি লালু। কারণ, যাওয়া হবে কি হবে না এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে হলেও শেষবেলায় তিনি একাই গিয়েছিলেন। তবে এ বার করোনার শঙ্কাহীন পুজোয় লালু গিয়েছেন সদলে। লালুর বাড়ি যেখানে সেই দাসপাড়ার অনেক ঢাকিই দেশে বিভিন্ন রাজ্যে তো বটেই, বিদেশেও যান পুজোর সময়ে। কিন্তু ফি পুজোয় টিম লালুর বাঁধা ঠিকানা হয় মুম্বইয়ের লোখান্ডওয়ালা।

লালু তাঁর দলের বাকিদের সঙ্গে নাতি পঙ্কজকেও নিয়ে গিয়েছেন। মুম্বই থেকে পঙ্কজ টেলিফোনে বললেন, ‘‘আগেও এসেছি। এখানে পুজোর আনন্দই আলাদা। থাকা খাওয়া সব ব্যবস্থা খুব ভাল। তবে আসল আনন্দ হচ্ছে পুজোর সময় আর সন্ধ্যায় আরতির সময় ঢাক বাজানো। আমরা দল বেঁধে ঢাকের বোল তুলি আর নাচি। দেখতে আসেন কত মানুষ। অনেক বিখ্যাত মানুষকেও কাছ থেকে দেখতে পাই। কিন্তু দাদুর কড়া নির্দেশ থাকে সামনে, পাশে যেই থাকুন মন থাকবে কাঠিতে।’’ লালুর কথায় অবশ্য অভিজিতের প্রশংসাই বেশি। তিনি বললেন, ‘‘করোনার সময় পুজো হয়নি। কিন্তু আমাদের প্রাপ্য টাকা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। উনি খুব বড় মনের মানুষ।’’

লালুদের নিয়ে কী বলছেন অভিজিৎ? গায়কের দাবি, ‘‘মুম্বইতে অনেক পুজোই হয়। কিন্তু এটা যে সবচেয়ে বড় তা নিয়ে আর কারও দ্বিমত নেই। আমরা কোনও প্রচার করি না। তবুও বহু মানুষ একবার না এক বার আসেন।’’ বাংলা থেকে ঢাকি আনেন কেন? অভিজিৎ বলেন, ‘‘আমি বাঙালি। আর দুর্গাপুজো তো বাঙালির পুজো। মুম্বইতে হলেও আমাদের পুজোয় একেবারে বাংলার ছোঁয়া থাকে। ভোগ থেকে প্রতিমা সবেতেই সাবেক বাঙালিয়ানা। আর সেই ঐতিহ্য বজায় রাখতেই বাংলা থেকে ঢাকিদের আনা হয়। লালুবাবুদের জন্যই পুজো জমে ওঠে। বোধন থেকে বিসর্জন সবেতেই লেগে থাকে বাংলার ছোঁয়া।’’

আরও পড়ুন
Advertisement