লক্ষদ্বীপে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: এক্স।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিদ্রুপ করে মলদ্বীপের মন্ত্রীদের পোস্ট ঘিরে বিতর্ক বাড়ছে। এ বার ভারতের জনপ্রিয় ভ্রমণ সংস্থা মলদ্বীপ যাওয়ার সমস্ত বিমানের বুকিং বাতিল করে দিল। ওই সংস্থার মালিক জানিয়েছেন, দেশের প্রতি আনুগত্য এবং সহানুভূতি থেকে এই সিদ্ধান্ত তাঁরা নিয়েছেন।
ভারতের জনপ্রিয় অনলাইন ভ্রমণ সংস্থা ‘ইজ় মাই ট্রিপ’। রবিবার রাতে তারা এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নিশান্ত পিট্টি পোস্টে লেখেন, ‘‘আমাদের দেশের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা মলদ্বীপের সমস্ত বিমানের বুকিং বাতিল করে দিয়েছি।’’ অর্থাৎ, যাঁরা ওই সংস্থার মাধ্যমে মলদ্বীপে যাওয়ার বিমানের টিকিট কেটেছিলেন, তাঁদের টিকিট বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
ভারতের পাশাপাশি মলদ্বীপেও মন্ত্রীদের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক চলছে। ইতিমধ্যে তিন জন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করে দিয়েছে মলদ্বীপের মহম্মদ মুইজ়ু সরকার। তাঁরা হলেন মরিয়ম শিউনা, মালশা শরিফ এবং মাহজ়ুম মাজিদ।
কী নিয়ে এত বিতর্ক?
সম্প্রতি ভারতের ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপে গিয়েছিলেন মোদী। সেই সফরের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল করা হয়। অভিযোগ, মলদ্বীপের ওই মন্ত্রীরা তেমনই কিছু ছবিতে মোদীকে ‘পুতুল’ এবং ‘জোকার’ বলে মন্তব্য করেন। ভারত-ইজ়রায়েল সম্পর্ক নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়। পরে অবশ্য বিতর্কের মুখে পোস্টগুলি মুছে দেওয়া হয়।
মন্ত্রীদের ওই মন্তব্যে ভারতের সমাজমাধ্যমে ব্যাপক শোরগোল শুরু হয়। সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় চারদিকে। মলদ্বীপ সরকার প্রথম দিকে বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব না দিলেও পরে সে দেশের বিরোধী দলগুলিও এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে সরকারের সমালোচনা শুরু করে। মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলি (যাঁকে পরাজিত করে মুইজ়ু সম্প্রতি ক্ষমতায় এসেছেন) এবং আর এক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাসিদ মোদীর সমালোচনা করা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি তোলেন। তাঁরা জানান, ভারত মলদ্বীপের গুরুত্বপূর্ণ ‘মিত্র’। সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এমন মন্তব্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এর পরই ঘরে-বাইরে চাপের মুখে মুইজ়ু সরকার তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়।
মুইজ়ু চিনপন্থী শাসক হিসাবে পরিচিত। এর আগে মলদ্বীপে যিনি ক্ষমতায় ছিলেন, সেই সোলি আবার ভারত ঘেঁষা। ফলে তাঁকে হারিয়ে মুইজ়ু কুর্সিতে বসার পরেই মলদ্বীপ এবং ভারতের সম্পর্কে বদলের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। ক্ষমতায় আসার পরে ভারতের সেনাকে মলদ্বীপ থেকে সরে যেতে বলেন প্রেসিডেন্ট মুইজ়ু। অন্য দিকে, চিনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতাও কারও নজর এড়ায়নি। তবে মন্ত্রীদের মন্তব্য ঘিরে বিতর্কে মু্ইজ়ুকেও কিছুটা পিছু হটতে হয়েছে।