ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের একটি বুথে চলছে ভোটগ্রহণ। ছবি: রয়টার্স।
বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলছে। তবে সকাল থেকে বুথে বুথে ভোটারদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো কম। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, ভোটার সংখ্যা বিশেষ ভাবে কম রাজধানী ঢাকায়। দেশের নির্বাচন কমিশনের সেক্রেটারি জাহাঙ্গির আলমের বক্তব্য অনুযায়ী, সকাল ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চার ঘণ্টায় ভোট পড়েছে মাত্র ১৮.৫ শতাংশ।
৮টা থেকে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তা চলবে বিকেল ৪টে পর্যন্ত। এর মাঝে অশান্তি জারি বাংলাদেশে। ভোট বয়কট করার কথা আগেই জানিয়েছিল দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এ ছাড়াও জামাত-এ-ইসলামি, বাম জোটের মতো বিরোধী শিবির এই ভোট বয়কট করেছে। ভোট বয়কটের দাবিতে প্রচারও চালিয়েছে তারা। বিরোধী শিবিরের দাবি ছিল ‘নির্দল এবং নিরপেক্ষ’ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থাপনায় সাধারণ নির্বাচন। কিন্তু সেই দাবি শাসকদল আওয়ামী লীগ খারিজ করে দিয়েছে। যার ফলে তৈরি হয়েছে সংঘাতের আবহ। ভোটের আগের দিন শনিবার থেকে দেশে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে খালেদা জিয়ার দল। সেই কারণেই ভোটারদের উপস্থিতি কম বলে মনে করা হচ্ছে।
ভোটগ্রহণ পর্বের মাঝে হিংসার সাক্ষী থেকেছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর এসেছে। ইতিমধ্যে হিংসায় এক জনের প্রাণও গিয়েছে। মুন্সিগঞ্জে শাসকদলের এক কর্মীকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। মুন্সিগঞ্জ-৩ কেন্দ্রে বুথেই সামনেই ওই ঘটনা ঘটে। এলাকায় যা চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। যশোরের একটি কেন্দ্রের সামনে বোমা বিস্ফোরণে জখম হয়েছেন দু’জন রাজনৈতিক কর্মী।
অশান্তির কারণে নরসিংদীর একটি এবং নারায়ণগঞ্জের দু’টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বাতিল হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া, বেশ কিছু বুথে ভোট স্থগিত করে দিতে হয়েছে। নরসিংদীতে দেশের শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের পুত্র মনজুরুল মজিদ মাহমুদ সাদির বিরুদ্ধে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচন কমিশন তাঁকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম বিডি নিউজ়। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, রবিবার সকালে ভোট শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই বুথে গিয়ে মনজুরুল জোর করে ১২টি ব্যালট বুকে আওয়ামী লীগের নৌকা ছাপ দিয়ে দেন।
প্রথম আলো জানিয়েছে, ঢাকার বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন পর্যবেক্ষক কিংবা সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা পৌঁছলে ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে। আবার পর্যবেক্ষকেরা চলে গেলেই রাতারাতি ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে সেই লাইন। ফলে ‘প্রকৃত’ ভোটারদের আনাগোনা যে বুথগুলিতে বেশ কম, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।