এ বার ‘আইডিয়াল ট্রেন প্রোফাইল’ চালু করল ভারতীয় রেল। — ফাইল চিত্র।
কোন ট্রেনে কেমন যাত্রী হয়? বিশেষ বিশেষ সময়ে সেই ট্রেনে টিকিটের চাহিদাই বা কতটা বাড়ে? এ সবই রেল জানতে পারে সংশ্লিষ্ট ওই ট্রেনের অতীত দেখে। তাতে যদিও সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এ বার ‘আইডিয়াল ট্রেন প্রোফাইল’ চালু করল ভারতীয় রেল। এখন থেকে আর ‘অতীত’ না ঘেঁটেই জানা যাবে কোনও একটি দিনে, কোনও একটি বিশেষ ট্রেনের টিকিটের প্রকৃত চাহিদা। রেলের দাবি, এর ফলে তাদের রোজগার বাড়বে। একই সঙ্গে এক এক দিনে অতিরিক্ত পাঁচ হাজার যাত্রী ‘নিশ্চিত’ টিকিট নিয়ে সফর করতে পারবেন।
আইডিয়াল ট্রেন প্রোফাইল ঠিক কী? রেলের তরফে জানানো হয়েছে, এটি এমন একটি সফ্টঅয়্যার, যার মাধ্যমে সর্বোচ্চ সংখ্যক যাত্রীকে টিকিট দেওয়া যাবে। যে কোনও দিনে প্রতিটি মেল, এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের সঠিক চাহিদা জানা যাবে। রেলের বক্তব্য, সব দিন সব ট্রেনের টিকিটের চাহিদা এক রকম থাকে না। আবার সব শ্রেণির টিকিটের চাহিদাও সমান থাকে না। এ সব নির্ভর করে ট্রেনটি কোথা থেকে ছাড়ছে, কোন কোন স্টেশনে দাঁড়াচ্ছে, কোথায় গন্তব্য, তার উপরে। এ ছাড়াও একই পথে অন্য কোন ট্রেন রয়েছে কিংবা আরও কী ভাবে ওই গন্তব্যে পৌঁছনো যায়, ট্রেনটি কখন ছাড়ছে, কখন পৌঁছচ্ছে এ সবের উপরে নির্ভর করে টিকিটের চাহিদা।
এত দিন রেল এই বিষয়গুলি জানতে পারত অতীতের চাহিদা দেখে। কিন্তু সব সময়ে সঠিক হিসাব মেলে না। আবহাওয়া-সহ নানা কারণে টিকিটের চাহিদা ওঠানামা করে। এখন নতুন ব্যবস্থা চালু হয়ে গেলে সেই কাজটাই অনায়াসে করা যাবে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে রেল বিভিন্ন জোনের বিভিন্ন ট্রেনের প্রোফাইল জানতে পারবে। মরসুম অনুসারে এবং ছুটির হিসাবে টিকিটের চাহিদা ভিন্ন হয়। এখন নির্ভুল তথ্য পাওয়া গেলে রেল আরও বেশি করে যাত্রীকে ট্রেনে জায়গা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারবে। এর ফলে রেলের আয় যেমন বাড়বে, তেমনই অনেক বেশি যাত্রী টিকিট পাবেন।
এখন ‘আইডিয়াল ট্রেন প্রোফাইল’ পাইলট প্রোজেক্ট হিসাবে পূর্ব, মধ্য, উত্তর, দক্ষিণ, দক্ষিণ-মধ্য, পশ্চিম এবং পশ্চিম-মধ্য রেলওয়েতে ব্যবহার করা হচ্ছে। শুরুতে মোট ২০০টি ট্রেনের ক্ষেত্রে নতুন ব্যবস্থায় পাওয়া তথ্য ব্যবহার করা হবে।
এই সফ্টঅয়্যার বানানোর ক্ষেত্রে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ পথ নিয়েছে রেল। জানা গিয়েছে দু’বছরেরও বেশি সময়ের গবেষণার পরে ‘আইডিয়াল ট্রেন প্রোফাইল’ তৈরি করেছেন রেলকর্মীরাই। নেতৃত্বে ছিলেন সেন্টার অব রেলওয়ে ইনফর্মেশন সিস্টেমসের কর্তা আর গোপালকৃষ্ণণ। দাবি করা হয়েছে, এই ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু হয়ে গেলে এক একটি ট্রেনে নিশ্চিত টিকিটের যাত্রী সংখ্যা পাঁচ শতাংশ বাড়বে।