তেজস যুদ্ধবিমান। — ফাইল চিত্র।
ছ’দশকের পুরনো রুশ যুদ্ধবিমান মিগ-২১-এর পরিবর্ত হিসেবে ভারতীয় ফাইটার জেট তেজসের নতুন সংস্করণকে বেছে নিতে চলেছে বায়ুসেনা। ইতিমধ্যেই ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে উৎপাদনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, বেঙ্গালুরুর ‘হিন্দুস্তান অ্যরোনটিক্স লিমিটেড’ (হ্যাল)-কে ১০০টি তেজস মার্ক-১এ সরবরাহের বরাত দেওয়া হয়েছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে।
দীর্ঘ পরীক্ষাপর্বের পরে ২০২১ সালের গোড়ায় দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ৮৩টি হালকা যুদ্ধবিমান তেজসের উন্নত সংস্করণ মার্ক-১এ কেনার বিষয়ে ছাড়পত্র দিয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি। তার পরেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এর উৎপাদন শুরু করেছে হ্যাল। বায়ুসেনা সূত্রের খবর, মূলত ষাটের দশকের রুশ মিগ-২১-এর পরিবর্ত হিসাবেই ব্যবহার করা হবে দেশীয় প্রযুক্তি হালকা যুদ্ধবিমানগুলি। বায়ুসেনার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আগামী কয়েক বছরে ৩০০-রও বেশি তেজস যুদ্ধবিমান শামিল হবে ফাইটার স্কোয়াড্রনগুলিতে।
চতুর্থ প্রজন্মের ‘লাইট কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট’ গোত্রের তেজস সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। এর ৬৫ শতাংশেরও বেশি যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামও ভারতীয় সংস্থাগুলি তৈরি। চিনের জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানের তুলনায় তেজসের নয়া সংস্করণ প্রযুক্তিগত উৎকর্ষে এগিয়ে বলে একাধিক আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বিষয়ক রিপোর্টে জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, হালকা যুদ্ধবিমান উৎকর্ষের মাপকাঠিতে তেজসের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলনায় আসে চিনা জেএফ-১৭।
তেজসকে ‘অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যান্ড অ্যারো রেডার’ (এএসইএ), মিড এয়ার ফুয়েলিং এবং‘অস্ত্র’ ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত করার কাজও সম্পূর্ণ করে ফেলেছে হ্যাল। ইতিমধ্যেই ভারতীয় নৌবাহিনীর বিমানবাহী জাহাজ আইএনএস বিক্রমাদিত্যে সফল উড়ান এবং অবতরণ পরীক্ষা হয়েছে তেজসের। ফলে অদূর ভবিষ্যতে বায়ুসেনার পাশাপাশি ভারতীয় নৌসেনাতেও দেখা যেতে পারে এই যুদ্ধবিমানকে। ভারতের পাশাপাশি মালয়েশিয়ার বিমানবাহিনীও সম্প্রতি তেজস মার্ক-১ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।