চলতি শীতের মরসুমে দিল্লির দূষণ পরিস্থিতি। ধোয়াঁশার চাদরে ঢেকেছে যমুনা নদী। —ফাইল চিত্র।
দিল্লিতে বাতাসের গুণমান আবার ‘অতি ভয়ানক’ হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফের দূষণ মোকাবিলার সর্বোচ্চ বিধি বা গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান ৪ (জিআরএপি ৪) জারি করা হয়েছে রাজধানী অঞ্চলে। সোমবার দুপুরেই জিআরএপি ৩ কার্যকর করা হয় রাজধানীতে। তার কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই সর্বোচ্চ মাত্রার নিয়ন্ত্রণবিধি জারি করে প্রশাসন। সোমবার বেশি রাতের দিকে এ বিষয়ে নির্দেশিকা প্রকাশ করে রাজধানীর বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট)।
সোমবার সকালে রাজধানীতে বাতাসের গুণমানের সূচক ৩০০ পার করে যায়। ফলে জিআরএপি ৩ জারি করতে বাধ্য হয় কমিশন। বিকেল ৪টে পর্যন্তও বাতাসের গড় গুণমান ছিল ৩৭৯। পরে রাত ১০টার দিকে বাতাসের গুণমান আরও খারাপ হয়ে ৪০০ অতিক্রম করে যায়। তখন আরও কড়াকড়ির পথে এগোয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিশন।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (সিপিসিবি)-এর তথ্য অনুযায়ী, বাতাসের গুণগত মানের সূচক যদি শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে তা হলে তা ‘ভাল’ পর্যায়ের মধ্যে পড়ে। ৫১-১০০ সন্তোষজনক, ১০১-২০০ সামান্য খারাপ, ২০১-৩০০ খারাপ, ৩০১-৪০০ খুব খারাপ, ৪০১-৫০০ অতি ভয়ানক।
উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে মঙ্গলবার থেকে নয়ডার স্কুলগুলি ‘হাইব্রিড মডেলে’ চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্কুলগুলিতে অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা চালু করতে হবে। অভিভাবকেরা স্থির করবেন, তাঁরা তাঁদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাবেন, না কি অনলাইনে ক্লাস করাবেন। রাজধানী অঞ্চলের দূষণ এবং শৈত্যপ্রবাহের কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণবিধি জারি থাকাকালীন রাজধানী অঞ্চলে সমস্ত নির্মাণকাজ বন্ধ থাকবে। রাজধানীতে ট্রাকের প্রবেশও নিয়ন্ত্রণ করা হবে। স্কুলে সশরীরে পড়ুয়াদের উপস্থিত থাকতে হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। সরকারি অফিসগুলিতেও অর্ধেক কর্মীকে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করানো হবে কি না, সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে পারে প্রশাসন। প্রয়োজন মনে করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে সাময়িক ভাবে বন্ধও রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন বাণিজ্যিক গাড়ি চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে।
গত মাসেও রাজধানীর দূষণ নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণবিধি জারি করা হয়েছিল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, আদালতকে না জানিয়ে নিয়ন্ত্রণবিধি শিথিল করা যাবে না। এর পরে বাতাসের গুণমান উন্নত হওয়ার প্রবণতা দেখা দিলে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণবিধি শিথিল করার অনুমতি দেয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু আদালত একই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছিল, বাতাসের গুণমান আবার খারাপের দিকে গেলে নিয়ন্ত্রণবিধি জারি করতে হবে।