Godhra

গোধরায় ট্রেনে আগুন লাগানোর ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তকে জামিন দিল সুপ্রিম কোর্ট

বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি দিয়েছিল গুজরাত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে গোধরাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির বিরোধিতা করেন গুজরাত সরকারের আইনজীবী তথা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:৪৮
গোধরা-কাণ্ডের পর গুজরাত জুড়ে শুরু হয়েছিল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা।

গোধরা-কাণ্ডের পর গুজরাত জুড়ে শুরু হয়েছিল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। ফাইল চিত্র।

গোধরায় সাবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগানোর ঘটনায় এক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিমহার বেঞ্চ গোধরাকাণ্ডের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দোষী ফারুককে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়ার জন্য নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দিয়েছে। ১৭ বছর ধরে জেলবন্দি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ফারুক, পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাঁকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল।

গুজরাত সরকারের তরফে মামলার শুনানিতে অং‌শ নিয়েছিলেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি সাজাপ্রাপ্তের জামিনে মুক্তির আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘‘মহিলা, শিশু-সহ ৫৯ জনকে পুড়িয়ে মারার মতো জঘন্য অপরাধে জড়িতদের মুক্তির প্রয়োজন নেই।’’ নিছক ট্রেনে পাথর ছোড়া বা আগুন ধরানো নয়, ওই ঘটনার দোষীরা পরিকল্পিত ভাবে সাবরমতী এক্সপ্রেসের এস-৬ কামরার দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে খুনের উদ্দেশ্যে আগুন ধরিয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।

Advertisement

অন্য দিকে, আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী জানান, গুজরাত হাই কোর্টের সাজার রায় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিযুক্তদের অনেকেই শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছেন। সেই আবেদনগুলি এখনও বিচারাধীন। প্রসঙ্গত, এর আগে গোধরাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত এক জনকে তার ক্যানসারে আক্রান্ত স্ত্রীর চিকিৎসায় সহায়তার জন্য জামিন দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।

প্রসঙ্গত, ২০০২-এর ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরায় সাবরমতী এক্সপ্রেসে করসেবকদের পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটে। ট্রেনের এস-৬ কোচের অগ্নিকাণ্ডে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়। এঁদের অধিকাংশ অযোধ্যা থেকে ফেরা করসেবক। সেই ঘটনার পরই দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে গুজরাত জুড়ে। অভিযোগ, সরকারি মদতে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা হামলা চালায় সে রাজ্যের মুসলিমদের উপর। দাঙ্গার বলি হন হাজারেরও বেশি মানুষ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। তিনিও সমালোচনার মুখে পড়েন।

ঘটনার তদন্তে সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছিল। গুজরাত সরকারের তরফে গঠন করা হয় একাধিক কমিশনও। গোধরাকাণ্ডের তদন্তে গুজরাত সরকারের গঠিত নানাবতী-মেহতা কমিশন মত দিয়েছিল, ট্রেনে আগুন নিছক দুর্ঘটনা নয়, এর পিছনে ষড়যন্ত্র ছিল।

এই ঘটনার ৯ বছর পরে ২০১১-র পয়লা মার্চ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গোধরাকাণ্ডে ৩১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। তাদের মধ্যে ১১ জনের ফাঁসির সাজা হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় ২০ জনের। মুক্তি পান অভিযুক্ত ৬৩ জন। এর মধ্যে ছিলেন গোধরাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড বলে যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, সেই মৌলভি উমরজির নামও। শাস্তির রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দোষী সাব্যস্তরা গুজরাত হাইকোর্টে একাধিক মামলা করে। ২০১৭-র অক্টোবরে গুজরাত হাই কোর্ট ১১ জনের ফাঁসির সাজা রদ করে যাবজ্জীবন জেলের সাজা দেয়। ২০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement