মণিপুরে সক্রিয় নিরাপত্তা বাহিনী। ছবি: পিটিআই।
আবার অশান্ত মণিপুর। আবার সংঘর্ষ এবং মৃত্যুর ঘটনা। শুক্রবার রাতে সে রাজ্যের বিষ্ণুপুর জেলার মেইতেই অধ্যুষিত কাওয়াকটা এলাকায় সশস্ত্র কুকি জঙ্গিদের হামলায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। পাল্টা হামলায় ওই এলাকায় কুকিদের কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, কয়েক দশক ধরেই অসম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সক্রিয় জঙ্গিদের ঘাঁটি রয়েছে মায়ানমারে। সেখানে চিনা গুপ্তচর সংস্থা ধারাবাহিক ভাবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জঙ্গিদের অস্ত্র এবং পরিকাঠামোগত সহায়তা করে বলে অভিযোগ। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, চিনা মদতপ্রাপ্ত জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির তালিকায় রয়েছে কুকি ন্যাশনাল আর্মি, কুকি ন্যাশনাল ফ্রন্ট, ইউনাইটেড কুকি লিবারেশন ফ্রন্ট-সহ বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর। মণিপুরে সাম্প্রতিক গোষ্ঠীহিংসায় যাদের ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে অভিযোগ।
মণিপুরের সাম্প্রতিক হিংসাপর্বে মায়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী পিডিএফ-এর ‘ভূমিকা’ নিয়েও বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। বিষ্ণুপুর-চূড়াচাঁদপুর এলাকায় মেইতেই গ্রামগুলিতে খুন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের একাধিক ঘটনায় ওই গোষ্ঠী জড়িত দাবি পুলিশের। কাওয়াকটায় হামলার ঘটনাতেই পিডিএফ-সংশ্রবের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’শো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।