Assembly Election 2024

এ বার মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডে যুযুধান এনডিএ-‘ইন্ডিয়া’, ২৩ নভেম্বর হবে গণনা, রাজনৈতিক সমীকরণ কী?

ঝাড়খণ্ড বিধানসভার ৮১টি আসনের জন্য ১৩ নভেম্বর এবং ২০ নভেম্বর ভোটগ্রহণ হবে। ২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্রে শুধু ২০ নভেম্বর। সঙ্গে রাহুল গান্ধীর ছেড়ে দেওয়া ওয়েনাড় লোকসভা-সহ কয়েকটি উপনির্বাচন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:২৫
Election Commission announces Assembly Elections 2024 schedule for Maharashtra and Jharkhand

(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী। রাহুল গান্ধী (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।

হরিয়ানা এবং জম্মু ও কাশ্মীরের পরে আবার মুখোমুখি লড়াইয়ে দুই রাজনৈতিক জোট— এনডিএ এবং ‘ইন্ডিয়া’। এ বার মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা ভোটে। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানান, পশ্চিমবঙ্গের পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা ভোট হবে দু’দফায়। মহারাষ্ট্রে এক দফায়। সেই সঙ্গে বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ছেড়ে দেওয়া কেরলের ওয়েনাড় লোকসভা এবং বাংলার ছ’টি বিধানসভা-সহ বেশ করেকটি উপনির্বাচনেরও নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেন তিনি। জম্মু ও কাশ্মীর এবং হরিয়ানায় সরকার গঠনের আগেই আরও দুই রাজ্যে ভোট ঘোষণা করে দিল কমিশন।

Advertisement

ঝাড়খণ্ড বিধানসভার ৮১টি আসনের জন্য ১৩ নভেম্বর এবং ২০ নভেম্বর ভোটগ্রহণ হবে। ২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্রে শুধু ২০ নভেম্বর। বিভিন্ন উপনির্বাচন এবং দু’টি রাজ্যের বিধানসভা ভোটের একসঙ্গেই গণনা হবে ২৩ নভেম্বর। মহারাষ্ট্রে চলতি বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৬ নভেম্বর। ঝাড়খণ্ডে আগামী বছরের ৫ জানুয়ারি। মহারাষ্ট্রে বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা এবং আর এক উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের এনসিপির সঙ্গে ‘মহাজুটি’ গড়ে সরকার চালাচ্ছে বিজেপি। ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতায় রয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম), কংগ্রেস, আরজেডি, বামেদের ‘ইন্ডিয়া’। মুখ্যমন্ত্রী জেএমএমের হেমন্ত সোরেন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, চার মাস আগে লোকসভা ভোটে মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোট ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’র কাছে বিজেপি, শিন্ডেসেনা, অজিত পওয়ারপন্থী এনসিপির জোট পর্যুদস্ত হওয়ার কারণেই সেই দফায় হরিয়ানা এবং জম্মু ও কাশ্মীরের সঙ্গে সে রাজ্যে বিধানসভা ভোট হয়নি। কারণ, ‘ঘর গোছাতে’ সময় নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের দল। ফলে গত দু’দশকের প্রথা ভেঙে হরিয়ানা এবং এবং মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট হচ্ছে আলাদা আলাদা সময়ে। মহারাষ্ট্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ন’কোটি ৬৩ লক্ষ। ঝাড়খণ্ডে দু’কোটি ৬০ লক্ষ। বুথের সংখ্যা মহারাষ্ট্রে এক লক্ষ ১৮৬, ঝাড়খণ্ডে ২৯ হাজার ৫৬২। মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জাদুসংখ্যা ১৪৫। ঝাড়খণ্ডে ৪১।

২০১৯-এর বিধানসভা ভোটে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন ‘অখণ্ড’ শিবসেনা এবং বিজেপি জোট বেঁধে লড়েছিল। মূল প্রতিপক্ষ ছিল কংগ্রেস এবং ‘অখণ্ড’ এনসিপি। ভোটে শিবসেনা-বিজেপি জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও গোল বাধে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে। এর পর এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের বিদ্রোহী ভাইপো অজিতের সমর্থন পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফডণবীস। অজিত হন উপমুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এনসিপি পরিষদীয় দলে ভাঙন ধরাতে ব্যর্থ হয়ে ৮০ ঘণ্টার মধ্যেই ইস্তফা দিতে হয়ে তাঁকে। অজিত ফের কাকার শিবিরে আশ্রয় নেন।

এর পরে শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপির ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’র মুখ্যমন্ত্রী হন উদ্ধব। কিন্তু ২০২২-এর জুনে সংখ্যাগরিষ্ঠ শিবসেনা বিধায়ককে নিয়ে একনাথ শিন্ডে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে ক্ষমতা দখল করেন। গত বছর কাকা শরদের অধিকাংশ বিধায়ক ভাঙিয়ে অজিতও বিজেপির সঙ্গী হয়েছেন। কিন্তু লোকসভা ভোটে সেখানে ধাক্কা খেয়েছে এনডিএ। লোকসভা ভোটে মহারাষ্ট্রে ৪৮টি আসনের মধ্যে এনডিএ পেয়েছে ১৭টি আসন। বিজেপি ন’টি, দুই শরিক শিবসেনা (শিন্ডে) এবং এনসিপির অজিত গোষ্ঠী যথাক্রমে জিতেছে সাতটি ও একটি আসন। পাঁচ বছর আগের ফল থেকে প্রায় দু’ডজন আসন কম পেয়েছে এনডিএ জোট।

অন্য দিকে, লোকসভা ভোটে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্যে (জনসংখ্যার নিরিখে) বিজেপির জোটকে টেক্কা দিয়েছে কংগ্রেস, উদ্ধব ঠাকরেপন্থী শিবসেনা (ইউবিটি) এবং শরদ পওয়ারপন্থী এনসিপি (এসপি)-র জোট ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’। সে রাজ্যের ৪৮টি লোকসভা আসনের মধ্যে বিরোধী জোটের ঝুলিতে গিয়েছে ৩০টি (কংগ্রেস ১৩, উদ্ধবসেনা নয় এবং শরদপন্থী এনসিপি আট)। পাশাপাশি, সাংলি আসনে জয়ী নির্দল প্রার্থী কংগ্রেস শিবিরে ভিড়ে গিয়েছেন ইতিমধ্যেই। ঝাড়খণ্ডে লোকসভা ভোটে অবশ্য প্রাধান্য বজায় রেখেছে বিজেপি। সে রাজ্যে ১৪টি আসনের মধ্যে বিজেপি ন’টি এবং ‘ইন্ডিয়া’ পাঁচটিতে (জেএমএম তিন, কংগ্রেস দুই) জিতেছে।

আরও পড়ুন
Advertisement