আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। — ফাইল চিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় সেখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, এমন অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারকে ‘উপযুক্ত ব্যবস্থা’ নেওয়ার আর্জি জানাল শিক্ষামহলের একাংশ। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকার এবং রাজভবনের ‘মতানৈক্য’ গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাবিদ ফোরাম মনে করে, এই মতানৈক্যের জেরে সামগ্রিক ভাবে ক্ষতি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিরই। যার জেরে সমস্যায় পড়েছেন অধ্যাপক এবং ছাত্র-ছাত্রীরা। সেই সঙ্গে আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে ‘সুপ্রিম’ নির্দেশ উপেক্ষা করার অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষাবিদেরা।
উপাচার্য সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে শুক্রবার ফোরামের তরফে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভাবে ধসে গিয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় ‘অরাজকতা’ সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তাঁরা আচার্যকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন।
শিক্ষাবিদদের কথায়, ‘‘উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের একতরফা, অনৈতিক, বেআইনি ভাবে সিদ্ধান্তই এই অচলাবস্থার কারণ। রাজ্যের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই মুহূর্তে কোনও উপাচার্য নেই।’’ রাজ্য সরকারের কাছে তাঁদের আবেদন অবিলম্বে যেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
উপাচার্য না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ‘নিয়মিত ভর্তি, পঠনপাঠন, গবষণা’র কাজ বন্ধ বলেও অভিযোগ ফোরামের। উদাহরণস্বরূপ, তারা রাজ্যের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা উল্লেখ করেছে বিজ্ঞপ্তিতে। তাদের কথায়, ‘‘যাদবপুর এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যেরা ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছেন।’’ এ ছাড়াও পুরুলিয়ার সিধুকানহো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কথা বলতে গিয়ে শিক্ষাবিদেরা বলেন, ‘‘অধ্যাপক হিসাবে অবসর নেওয়ার সময় পেরিয়ে গেলেও সিধুকানহো বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব সামলেই চলেছেন।’’
পাশাপাশি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আর্থিক তছরুপ’-এর অভিযোগ তুলেছে ফোরাম। তাদের দাবি, ব্যাঙ্কে বিশ্ববিবিদ্যালয়ের নামে যে স্থায়ী আমানত রয়েছে, তা ভাঙানো হয়েছে। অথচ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দার্জিলিং, ঝাড়গ্রাম এবং কন্যাশ্রী বিশ্ববিবিদ্যালয়ের ‘অব্যবস্থা’র কথাও তুলে ধরা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
তার পরই সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষাবিদেরা। সেই সঙ্গে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি বার বার পিছিয়ে যাওয়া নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন তারা। তাদের আবেদন রাজ্য যেন যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়।