সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়ল ইডি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ইডির জিজ্ঞাসাবাদ করার ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা নিয়ে আগেও বিভিন্ন হাই কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়েছে ইডি। এ বার শীর্ষ আদালতেও প্রশ্ন উঠল তা নিয়ে। কয়েক মাস আগে এক কংগ্রেস নেতাকে ১৫ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। এ ভাবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা একটি ‘অমানবিক আচরণ’ বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
বেআইনি ভাবে বালি তোলার মামলায় হরিয়ানার কংগ্রেস নেতা সুরেন্দ্র পনওয়ারকে গত সেপ্টেম্বরে তলব করে ই়ডি। সকাল ১১টায় তিনি ইডির অফিসে প্রবেশ করেন। সেই থেকে রাত ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সব মিলিয়ে ১৪ ঘণ্টা ৪০ মিনিট ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সে দিন। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি অগাস্টনি জর্জ মাসিহ্র বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে বালি তোলার অভিযোগ রয়েছে। কোনও জঙ্গি কার্যকলাপের অভিযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে এই ধরনের আচরণ অমানবিক। যদিও ইডির আইনজীবী জানান, ওই জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের মাঝে তাঁকে নৈশভোজের জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল।
বস্তুত, এই মামলায় অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতার গ্রেফতারিকে আগেই বেআইনি বলে জানিয়েছে পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাই কোর্ট। বেআইনি বালি উত্তোলন সংক্রান্ত মামলায় আর্থিক তছরুপ দমন আইনের আওতায় পড়ে না বলে জানায় হাই কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টেও সেই নির্দেশই বহাল রাখা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, বেআইনি ভাবে বালি তোলা একটি অপরাধ। তবে সেটি খনি ও খনিজ সম্পদ উন্নয়ন এবং নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় পড়ে। আর্থিক তছরুপ দমন আইনের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই. ফলে এই মামলায় ইডির গ্রেফতারি বেআইনি বলেই মনে করছে শীর্ষ আদালত।
পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাই কোর্টেও এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল ইডি। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, ১৫ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ কোনও ‘নায়কোচিত’ কাজ নয়। বরং এটি কোনও মানুষের মর্যাদার পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছিল আদালত। এর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই ইডির তরফে একটি অভ্যন্তরীণ নির্দেশিকা জারি করা হয় আধিকারিকদের জন্য। সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কাউকে তলব করে ‘অযৌক্তিক’ সময়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন না ইডির তদন্তকারী আধিকারিকেরা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ইডির দফতরে অপেক্ষাও করানো যাবে না।