হালকা যুদ্ধ ট্যাঙ্ক। ছবি: সংগৃহীত।
বছর ঘোরার আগেই সাফল্যের মুখ দেখতে চলেছে ‘ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা এবং উন্নয়ন সংস্থা’ (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজ়েশন বা ডিআরডিও)। গত বছরের মার্চ মাসে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক দেশীয় প্রযুক্তিতে হালকা ট্যাঙ্ক নির্মাণের কথা ঘোষণা করেছিল। সেই লক্ষ্যে তৈরি ‘জ়োরাবর’-এর পরীক্ষা শুরু হল লাদাখের শীতল মরুভূমিতে।
প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছিল চার বছর আগেই। ২০২০-র অগস্টে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’র হামলায় ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যুর পরে। সম্ভাব্য চিনা হামলার আশঙ্কায় দ্রুত ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায়’ (এলএসি) সেনা মোতায়েন করার সময় খামতি ধরা পড়ে হালকা ট্যাঙ্কের ক্ষেত্রে। ডিআরডিও-র তৈরি ‘অর্জুন’, রুশ টি-৯০ (ভীষ্ম), টি-৭২ (অজেয়) ওজনে ভারী হওয়ায় লাদাখের পাহাড়ি অঞ্চলে যুদ্ধের উপযুক্ত নয়।
সে সময় চিনা হালকা ট্যাঙ্ক জ়েডটিকিউ-১৫-র মোকাবিলায় ভারতীয় সেনাকে ভরসা করতে হয়েছিল আশির দশকে রাশিয়া থেকে আনা বিএমপি-২ ‘ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিকল্’ (সাঁজোয়া গাড়ি)-এর উপর। লাদাখে টানাপড়েনের সময়ই সেনার তরফে হালকা ট্যাঙ্কের আবেদন জানানো হয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে। প্রাথমিক ভাবে চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে আমদানির কথা ভাবা হলেও শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্লোগান অনুসরণ করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ডিআরডিও-কে হালকা ট্যাঙ্ক নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বছর ঘোরার আগেই সেই প্রকল্পে প্রাথমিক সাফল্য পেলেন ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় যাতায়াতে সক্ষম ‘জ়োরাবর’ হাতে পেলে ভারতীয় সেনার পক্ষে এলএসি-তে চিনা আগ্রাসনের মোকাবিলা অনেক সহজ হবে বলে সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন। ডিআরডিও-র তরফে জানানো হয়েছে, লাদাখে যুদ্ধ মহড়ার পরীক্ষা চলবে আগামী চার মাস। তাতে উত্তীর্ণ হলে, পরবর্তী কয়েক মাসের মধ্যেই সেনার জন্য ‘জ়োরাবর’-কে প্রস্তুত করার কাজ শুরু হবে।