—প্রতীকী চিত্র।
স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই সরকারি চিকিৎসক। একই ঘর থেকে তাঁদের দেহ উদ্ধার ঘিরে শোরগোল মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলার বীণা টাউন এলাকায়। মৃতদের নাম বলবীর কঠোরিয়া এবং মঞ্জু কঠোরিয়া। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, ঋণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ওই চিকিৎসক দম্পতি।
বলবীর এবং মঞ্জুর একমাত্র সন্তান প্রতীক ডাক্তারি পড়ুয়া। বিহারের পটনার একটি কলেজে এমবিবিএস পড়ছেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সকালে পটনা থেকে বাড়ি ফেরেন তিনি। কিন্তু অত সকালে বাড়ির মূল দরজা খোলা দেখে খটকা লাগে তাঁর। যুবক বাড়িতে ঢুকেই চমকে যান। দেখেন বাবার দেহ সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে। মা পড়ে রয়েছেন বিছানায়। দু’জনেরই তখন মৃত্যু হয়েছে। তাঁর চিৎকার-চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। খবর যায় পুলিশের কাছে।
চিকিৎসক দম্পতির দেহ উদ্ধারের করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। যে ঘর থেকে দু’জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেখান থেকেই একটি চিঠি মেলে। যা ‘সুইসাইড নোট’ বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, ব্যাঙ্ক থেকে প্রচুর টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তাঁরা। তার জন্য বার বার ব্যাঙ্ককর্মীরা বাড়ি বয়ে এসে অপমান করেছেন। ওই হেনস্থা সহ্য করতে না পেরে তাঁরা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্য দিকে, তদন্তকারীদের কাছে চিকিৎসক দম্পতির পুত্র জানিয়েছেন, তিনি যে বাড়ি আসবেন, তা বাবা-মাকে বলেছিলেন। তখন ভাল ভাবেই কথাবার্তা হয়। বাবা-মা যে এমন একটি পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তা ঘুণাক্ষরেও তিনি টের পাননি।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বলবীর বিদিশা জেলার একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। আর মঞ্জু স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি কাজ করতেন বীণা টাউনের একটি সরকারি হাসপাতালে। মঞ্জুর দেহ যে বিছানায় পড়েছিল, সেখান থেকে একটি খালি সিরিঞ্জ এবং তুলো পেয়েছেন তদন্তকারীরা। যা থেকে মনে করা হচ্ছে, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে কোনও বিষপ্রয়োগ করেছেন শরীরে।
তদন্তে উঠে এসেছে আরও একটি তথ্য। তিন বছর আগে ওই চিকিৎসক দম্পতির একমাত্র কন্যা পূর্বাও আত্মহত্যা করেন। তিনি মানসিক অসুখে ভুগছিলেন। প্রতীক জানান, তাঁর বোন পূর্বা খুবই ভাল ছাত্রী ছিলেন। ডাক্তারি পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, মেয়ের মৃত্যু চিকিৎসক দম্পতিকে ভীষণ নাড়া দিয়েছিল। তার পর প্রচুর ধারদেনায় জড়িয়ে দুই চিকিৎসক খুবই চাপের মধ্যে ছিলেন। একটি বাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছিলেন ওই দম্পতি। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।