Manipur

আবার অশান্ত মণিপুর, দগ্ধ বাড়ি থেকে উদ্ধার জোড়া মৃতদেহ, কার্ফু জারি জিরিবাম জেলায়

সোমবার সিআরপিএফের শিবিরে হামলা চালান এক দল ব্যক্তি। সিআরপিএফ পাল্টা গুলি চালালে হামলাকারীদের ১১ জন নিহত হন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর অনুমান, নিহতেরা সকলেই কুকি জঙ্গি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:০৩
মণিপুরে সেনাটহল।

মণিপুরে সেনাটহল। ছবি: পিটিআই।

নতুন করে অশান্ত হল মণিপুর। সিআরপিএফের গুলিতে ১১ কুকি জঙ্গির মৃত্যুর পর সোমবার রাত থেকেই কার্ফু জারি জিরিবাম জেলায়। রাতে পার্শ্ববর্তী পশ্চিম ইম্ফল জেলায় সশস্ত্র কুকি জঙ্গিরা হামলা চালান বলে অভিযোগ। ঘটনায় দু’জন সাধারণ মানুষ জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার জিরিবামে একটি দগ্ধ বাড়ি থেকে দুই প্রৌঢ়ের দেহ উদ্ধার হয়েছে।

Advertisement

অন্য দিকে, মঙ্গলবারও কার্ফু চলছে জিরিবাম জেলার বেশ কিছু এলাকায়। গোটা জেলা জুড়েই থমথমে পরিবেশ। অসমের সীমানাবর্তী এই জেলাতেই সোমবার দুপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের শিবিরে হামলা চালান এক দল ব্যক্তি। সিআরপিএফ পাল্টা গুলি চালালে হামলাকারীদের ১১ জন নিহত হন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর অনুমান, নিহতেরা সকলেই কুকি জঙ্গি। তাঁদের ছোড়া গুলিতে সিআরপিএফের এক জওয়ানও গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি অসমের শিলচর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি। সোমবার রাতে গুলির লড়াই চলেছে পশ্চিম ইম্ফলেও। সেখানে কুকি জঙ্গিদের গুলিতে জখম হয়েছেন দু’জন। পাশাপাশি, মঙ্গলবার সকালে জিরিবামের একটি বাড়ির ভিতর থেকে দুই প্রৌঢ়ের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এর পরেই জিরিবাম জেলা জুড়ে জারি হয়েছে কার্ফু। অন্য দিকে, ১১ জন ‘গ্রাম স্বেচ্ছাসেবক’-এর মৃত্যুতে একাধিক জায়গায় বন্‌ধ ঘোষণা করেছে কুকি গোষ্ঠীগুলি।

সোমবার মণিপুর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, নিহত ১১ জনই কুকি জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য। সোমবার দুপুরে তাঁরা প্রথমে বড়বেকরা মহকুমা সদর থানায় হামলা চালান। এর পর একাধিক বাড়িঘর ও দোকানে লুটপাট চালানো হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি বাড়ি। এর পর জাকুরাডোর করংয়ের রাস্তায় সিআরপিএফের উপর হামলা চালায় জঙ্গিদের ওই দল। দু’পক্ষে গুলির লড়াই শুরু হয়। তাতেই মৃত্যু হয় ওই ১১ জঙ্গির। ঘটনার পর এলাকা ঘিরে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান।

শনিবার রাতে এই জিরিবাম জেলারই জাইরাওন গ্রামে মেইতেই সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাম্বাই টেঙ্গল এবং ইউএনএলএফের যৌথ হামলায় এক কুকি মহিলার মৃত্যু হয়েছিল। রবিবার কুকি-জ়োদের যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফের মদতপুষ্ট জঙ্গিরা এক মেইতেই মহিলাকে খুন করে বলে অভিযোদ। তার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পূর্ব ইম্ফল জেলার থামনাপোকপি, সাবুংখোক এবং সানসাবি-সহ বিভিন্ন এলাকা। একাধিক জায়গায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চলে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশের উপর। সোমবারও বিভিন্ন এলাকা থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষের খবর এসেছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মণিপুরে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে প্রচুর গোলাবারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ও আধাসেনার যৌথ দল। এর মাঝে গত মাসের শুরুতেই মণিপুরে আরও ছ’মাসের জন্য বর্ধিত হয়েছে ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা)-এর মেয়াদ। ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, জিরিবাম এবং লামফেল-সহ ১৯টি থানা এলাকা ছাড়া গোটা রাজ্যেই এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে মণিপুরের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে এখনও রাজনৈতিক চাপানউতর চলছেই।

Advertisement
আরও পড়ুন