— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
এ বার থেকে নির্বাচনের কোনও রকম বৈদ্যুতিন নথি প্রকাশ্যে আনা হবে না। সম্প্রতি নির্বাচনী প্রক্রিয়া সংক্রান্ত আইন সংশোধনের পর এমনটাই জানিয়েছে ভারতীয় নির্বাচন কমিশন। এর পরেই সরব হয়েছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের একাংশ। অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের এই নতুন নিয়মবিধি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়ার পরিপন্থী।
১৯৬১ সালের নির্বাচনী বিধির ৯৩ (২) ধারা অনুযায়ী, এত দিন ভোট সংক্রান্ত যাবতীয় নথি জনসমক্ষে আনতে বাধ্য থাকত নির্বাচন কমিশন। সেই আইনেই বদল আনা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সিসিটিভি ফুটেজ, ওয়েবকাস্টিং ফুটেজ বা আদর্শ নির্বাচনী বিধি বলবৎ থাকাকালীন প্রার্থীদের ভিডিয়ো ফুটেজ— কিছুই খতিয়ে দেখতে পারবে না সাধারণ মানুষ। শুক্রবার এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে কেন্দ্রের আইন ও বিচার মন্ত্রক। সেখানেই বলা হয়েছে, এ বার থেকে শুধুমাত্র ভোটের নিয়ম সংক্রান্ত নথিগুলিই প্রকাশ্যে আনা হবে। নির্বাচনী প্রক্রিয়া সংক্রান্ত নথি আর প্রকাশ্যে আনা হবে না। এর পরেই সমালোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। শনিবার জাতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘ভারতের নির্বাচন কমিশন পরিচালিত ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছে। এ বার হাতেনাতে তার প্রমাণ পাওয়া গেল! নির্বাচনে স্বচ্ছতার প্রশ্নে কমিশনের এত ভয় কিসের?’’ কমিশনের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রে নির্বাচনের পর ভোটপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল কংগ্রেস। হরিয়ানার ফলপ্রকাশের পর ভোট সংক্রান্ত সমস্ত নথি দেখতে চেয়ে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মেহমুদ প্রাচা। ওই মামলায় চলতি মাসের শুরুতে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, হরিয়ানার নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের ভিতরের সিসিটিভি ফুটেজ, প্রাপ্ত ভোটের হার ইত্যাদি যাবতীয় তথ্য প্রকাশ্যে আনতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। ওই নথি তুলে দেওয়ার জন্য কমিশনকে ছয় সপ্তাহ সময়ও বেঁধে দেয় হাই কোর্ট। সেই মেয়াদ শেষের আগেই নির্বাচনী বিধিতে বদল আনল কমিশন।
যদিও নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, ১৯৬১ সালের নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, কেবলমাত্র ভোট সংক্রান্ত কাগজপত্রই কমিশন জনসমক্ষে আনতে বাধ্য। ওই আইনে কোথাও বৈদ্যুতিন নথির কথা বলা নেই। কিন্তু সম্প্রতি নির্বাচনী বিধির দোহাই দিয়ে এই ধরনের সংবেদনশীল বৈদ্যুতিন নথিও চেয়ে বসছেন কেউ কেউ! কমিশনের যুক্তি, ভোটকেন্দ্রের ভিতরের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এলে আর ভোটারদের গোপনীয়তা রক্ষা করা যাবে না। তা ছাড়া, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর সাহায্যে এই ফুটেজের অপব্যবহারও করা হতে পারে। সে কারণেই এই বদল।