Bombay High Court

‘পুলিশের কি খেয়েদেয়ে কাজ নেই?’ লিভ-ইন সম্পর্কে নিরাপত্তা চেয়ে কোর্টে ধমক খেলেন যুগল

লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতে চান ভিন্‌ধর্মী যুগল। পরিবারের বাধা পেয়ে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। পুলিশি নিরাপত্তার আবেদনও জানিয়েছেন। কিন্তু আদালত তাতে সম্মতি দেয়নি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৭
লিভ-ইন সম্পর্কে পুলিশের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে আবেদন যুগলের। অসন্তুষ্ট বিচারপতিরা।

লিভ-ইন সম্পর্কে পুলিশের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে আবেদন যুগলের। অসন্তুষ্ট বিচারপতিরা। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতে চান তাঁরা। দু’জনের ধর্ম ভিন্ন হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আদালতে এমনটাই জানিয়েছিলেন যুগল। কিন্তু বম্বে হাই কোর্ট তাঁদের আবেদনে সাড়া দেয়নি। উল্টে আদালতে ধমক খেতে হয়েছে ভিন্‌ধর্মী যুগলকে। তাঁদের প্রতি আদালতের প্রশ্ন, ‘‘আপনারা লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতে চান বলে পুলিশ আপনাদের পাহারা দেবে? পুলিশের কি খেয়েদেয়ে কাজ নেই?’’

Advertisement

২০ বছর বয়সি এক মুসলিম যুবক তাঁর ১৯ বছর বয়সি প্রেমিকার সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতে চান। কিন্তু পরিবার তাঁদের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন যুবক। প্রেমিকাকে নিয়ে তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তরুণীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁদের আটকায়। তরুণীকে উদ্ধার করে আপাতত একটি হোমে রেখেছে পুলিশ। তিনি বাবার বাড়িতে ফিরতে নারাজ। এর পরেই আদালতের দ্বারস্থ হন যুবক। তাঁর বক্তব্য, তাঁর প্রেমিকা প্রাপ্তবয়স্ক। নিজের ইচ্ছায় তিনি ঘর ছেড়েছেন।অভিযোগ, বজরং দল এবং অন্য কয়েকটি সামাজিক গোষ্ঠীর উস্কানিতে তাঁর পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নিতে চাইছে না।

তরুণীর পরিবারের পক্ষের আইনজীবী আদালতে জানান, যুবকের মামলাটি গ্রহণযোগ্য হওয়াই উচিত নয়। কারণ, ২১ বছর বয়স হয়নি তাঁর। ভারতের আইন অনুযায়ী, পুরুষের ক্ষেত্রে বিবাহের ন্যূনতম বয়স ২১।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, তরুণী প্রাপ্তবয়স্ক। তাই পরিবারের সঙ্গে তিনি থাকতে না-চাইলে তাঁকে জোর করা যাবে না। কিন্তু তাঁদের লিভ-ইন সম্পর্কের জন্য পুলিশি নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে আদালত মনে করে না। আবেদনকারী যুবকের প্রতি বিচারপতিদের প্রশ্ন, ‘‘তরুণী আপনার সঙ্গে থাকতে শুরু করলে ওঁকে নিরাপত্তা কে দেবে? আপনারা লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতে চান বলে পুলিশ আপনাদের বাড়ির সামনে দিনরাত পাহারা দেবে? পুলিশের কি খেয়েদেয়ে কাজ নেই? পুলিশকে আমরা এমন কোনও নির্দেশ দিতে পারব না।’’

তরুণীর সঙ্গেও আলাদা করে কথা বলেছিলেন বিচারপতিরা। তাঁদের পর্যবেক্ষণ, তরুণী জীবন সম্পর্কে এখনও অভিজ্ঞ নন। তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে স্পষ্ট কোনও ধারণা নেই। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘‘আপনাকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যদি যুবক ছেড়ে চলে যান, তখন কী করবেন?’’ তরুণী উত্তরে বলেন, ‘‘কোনও ভাবে ঠিক জীবন কাটিয়ে দেব।’’ তরুণী ‘স্বপ্নের জগতে’ বাস করছেন বলেও মন্তব্য করে আদালত। আপাতত ওই তরুণীকে হোমেই থাকতে বলেছেন বিচারপতিরা। সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন তাঁর বাবা। কিন্তু যুবকের কাছে তরুণীকে থাকার বা পুলিশ প্রহরার কোনও অনুমতি আদালত দেয়নি।

Advertisement
আরও পড়ুন