নামিবিয়া থেকে আনা চিতাগুলির একটি কুনো জাতীয় উদ্যানে। ছবি পিটিআই।
সোমবার দুপুরে মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানের নিরাপদ ঘেরাটোপে দেখা গেল মজার দৃশ্য, দুই ভাই ফ্রেডি ও অ্যাল্টন মনের আনন্দে খেলে বেড়াচ্ছে। দুই বোন সাভানা ও সাশা রয়েছে খোশমেজাজে। মন্দ নেই বাকি চার ভাই বোন ওবান, আশা, সিবিলি ও সাইশাও। সুদূর নামিবিয়া থেকে শনিবার ভারতে পা রাখার পরেও আফ্রিকান বন দফতরের নামেই ডাকা হচ্ছে আটটি চিতাকে।
জাতীয় উদ্যানের আধিকারিকদের দাবি, শনিবার যখন চিতাগুলোকে ছাড়া হয় তখন সেগুলো একটু ঘাবড়ে গেলেও এখন দিব্যি মানিয়ে নিয়েছে। তবে তাদের প্রতি পদক্ষেপের উপর কড়া নজর রাখছেন পশুচিকিৎসক ও চিতা বিশেষজ্ঞেরা। আপাতত এক মাসের জন্য নিরাপদ ঘেরাটোপে রাখা হবে চিতাগুলিকে, পরিবেশের সঙ্গে পুরোপুরি মানিয়ে নিলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে মুক্ত জাতীয় উদ্যানে। সেখানে শিকারের সুবিধার জন্য রাজগড় থেকে ১৮১টি চিতল হরিণ এনে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে বন দফতরের। যদিও পরিবেশ ও প্রাণী সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি ভারতের লুপ্তপ্রায় চিতার সঙ্গে আফ্রিকান চিতার অমিলই বেশি, ফলে নামিবিয়ার এই আটটি চিতা ভারতীয় পরিবেশে কতখানি মানিয়ে নিতে পারবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কুনো জাতীয় উদ্যান আদতে চিতার উপযু্ক্ত স্বাভাবিক ঘাসজমি নয়, বড় বড় গাছ কেটে কৃত্রিম ভাবে সেটিকে ‘উপযুক্ত’ বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে— এমন দাবিও উঠেছে। সঙ্গতে রয়েছে চিতাবাঘ ও চিতার মধ্যে এলাকা দখলের লড়াই, বিস্তীর্ণ ঘাসজমির অপ্রতুলতা। নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৯ সালে আফ্রিকান প্রজাতির চারটি চিতা জুনাগড়ের চিড়িয়াখানায় আনা হয়েছিল। ২০১৪ সালের অক্টোবরে সেই চারটি চিতার শেষটি মারা যায়। ফলে, এ বারের আটটি চিতার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
অন্য দিকে, নতুন চিতাগুলির খাবার হিসাবে ১৮১টি চিতল হরিণ পাঠানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হল বিষ্ণোই সম্প্রদায়। সর্বভারতীয় বিষ্ণোই মহাসভার প্রধান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, এ ভাবে হরিণগুলিকে খাদ্য হিসাবে পাঠানো আসলে পরিকল্পিত হত্যা। প্রতিবাদে হরিয়ানার ফতেহবাদে ধর্নায় বসেছেন বিষ্ণোইদের একাংশ।