মণিপুরের জিরিবামে হিংসায় এক নিহতের পরিবারের হাহাকার। ছবি: রয়টার্স।
মণিপুরের সেই মেইতেই পরিবারের নিহত ছয় সদস্যের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে এল। কী ভাবে অত্যাচার করে তাঁদের মারা হয়েছে, রিপোর্টে তার খুঁটিনাটি উঠে এসেছে। দু’বছরের শিশুর মাথায় গুলির ক্ষত, উপড়ানো চোখ, তার মা এবং দিদিমার শরীরে একাধিক গুলি অত্যাচারের অভিযোগকে আরও জোরালো করেছে।
মণিপুরের জিরিবাম জেলার একটি মেইতেই পরিবারের ছ’জনকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল কিছু দিন আগে। অভিযোগের আঙুল ওঠে কুকি জঙ্গিগোষ্ঠীর দিকে। অসম সীমানা লাগোয়া অঞ্চল থেকে অপহরণ করা হয়েছিল ওই ছ’জনকে। পরে জিরিবামের নদীতে শিশু এবং বৃদ্ধার মুণ্ডহীন দেহ ভেসে এসেছিল। যা দেখে অনেকে দাবি করেছিলেন, তা ওই পরিবারের সন্তান এবং দিদিমার দেহ। সেই ছ’জনের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পুলিশের হাতে এসেছে। শিশুটির বাবা তিন জনের রিপোর্ট পেয়েছেন। বাকি তিন জনের রিপোর্ট এখনও তিনি হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন। থানায় রিপোর্টের জন্য আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
দু’বছরের শিশুর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, তার মাথার মাঝখানে গুলি করা হয়েছিল। ডান চোখ ছিল উপড়ানো। এ ছাড়া, সারা শরীরে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল ওই শিশুর। আঘাত ছিল বুক এবং হাতে। শিশুর মায়ের বয়স ২৫ বছর। তাঁর বুকে তিনটি এবং নিতম্বে একটি গুলির ক্ষত ছিল। ৬০ বছর বয়সি দিদিমার শরীরে পাওয়া গিয়েছে মোট পাঁচটি গুলি। মাথায় একটি, বুকে দু’টি, পেটে একটি এবং হাতে একটি গুলি করা হয় তাঁকে।
ওই পরিবারের আরও তিন সদস্যের মধ্যে এক মহিলা, আট বছরের এক কন্যা এবং আট মাসের একটি শিশু রয়েছে। তাদের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনও পরিবার হাতে পায়নি বলে অভিযোগ।
মণিপুরের এই ঘটনায় কুকি জঙ্গিদের হাত রয়েছে, জানিয়েছে সে রাজ্যের সরকারও। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ এই তদন্ত করছে। গত বছর মণিপুরের হিংসায় ঘর হারিয়ে পরিবারটি জিরিবামের একটি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছিল। সেখান থেকেই ছ’জনকে অপহরণ করা হয় বলে দাবি। গত ১১ নভেম্বর কুকি জঙ্গিরা জিরিবামে থানা আক্রমণ করে। তাদেরই অপর একটি দল ওই পরিবারের উপর হামলা চালায়, অনুমান তদন্তকারীদের।