— ফাইল চিত্র।
নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের (সিএএ) আওতায় ভারতের প্রথম নাগরিকত্ব পেলেন এক প্রৌঢ়। ‘শুভ আরম্ভ’ হল এনআরসি-সিএএ বিরোধিতার কেন্দ্রস্থল খোদ অসমেই!
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ হওয়ার চার বছর পর চলতি বছরের মার্চ মাসে আইনের নিয়মগুলি বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করেছিল কেন্দ্র। এর পরেই এই আইনের অধীনে নাগরিকত্বের জন্য একে একে আবেদন জমা পড়তে থাকে। অসমে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জমা দিয়েছিলেন আট জন। এ বার সেই আট জনের মধ্যেই এক জনের নাগরিকত্ব সুনিশ্চিত করেছে ভারত সরকার।
ওই ‘নাগরিক’-এর নাম দুলন দাস। বয়স পঞ্চাশের কোঠায়। সম্প্রতি সিএএ-র অধীনে ভারতের নাগরিকত্বের আবেদন করেছিলেন তিনি। সংবাদমাধ্যমকে দুলন জানাচ্ছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে বাধ্য হয়ে দেশ ছাড়ে তাঁর পরিবার। সিলেটের বাড়ি ছেড়ে ভারতে এসে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন অসমের শিলচরে। যখন এ দেশে আসেন, তখন তিনি কিশোর। দুলন বলছেন, ‘‘নাগরিকত্বের শংসাপত্র সংগ্রহ করতে আমাকে গুয়াহাটির আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যেতে বলা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে ওই বার্তা এসেছিল। সেই মতো পাসপোর্ট অফিস থেকেই মঙ্গলবার হাতে পেয়েছি নাগরিকত্বের শংসাপত্র।’’
দুলনের আইনজীবী জানাচ্ছেন, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন তাঁর মক্কেল। ১৯৮৮ সালে অসমে এসেছিল তাঁর পরিবার। এর পর ১৯৯৬ সাল থেকে অসমের ভোটার তাঁরা। কিন্তু ১৯৭১-এর পর ভারতে আসায় তাঁরা শুরুতে নাগরিকপঞ্জিতে (এনআরসি) নাম নথিভুক্তকরণের আবেদন করেননি।
সরকারি সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত অসমে মোট আট জন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছেন। তার মধ্যে দু’জন আবার পরে প্রত্যাহারও করে নিয়েছেন নাম। যদিও অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানাচ্ছেন, শেষ পর্যন্ত রাজ্যে মাত্র ৫০ থেকে ১০০ জনই এই আইনের অধীনে নাগরিকত্ব পাবেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে দ্বিতীয় দফার মোদী সরকারের আমলে পাশ হয়েছিল নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন। এতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪-র আগে ভারতে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান, শিখ এবং পার্সিদের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বলা হয়। এ-ও বলা হয়, কেবলমাত্র যাঁরা নাগরিকত্বের আবেদন জানানোর আগে অন্তত এক বছর এবং তার আগে ১৪ বছরের মধ্যে অন্তত পাঁচ বছর ভারতে থেকেছেন, তাঁরাই নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য। তবে অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে ওই আইনে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে।