National Herald Case

ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় বাজেয়াপ্ত ৭৫২ কোটির সম্পত্তি, ইডির পদক্ষেপে সায় পিএমএলএ কর্তৃপক্ষের

বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) বিষয়ক বিচারবিভাগীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই মামলায় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এবং ইক্যুইটি শেয়ার সামরিক বাজেয়াপ্ত সঠিক সিদ্ধান্ত।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৩৬
ন্যাশনাল হেরাল্ড দফতর।

ন্যাশনাল হেরাল্ড দফতর। — ফাইল চিত্র।

ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ৭৫১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি ‘সাময়িক বাজেয়াপ্তে’র সিদ্ধান্তে সায় দিল বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) বিষয়ক বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ। গত নভেম্বরে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্কিত ওই সংস্থার বিপুল অঙ্কের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল।

Advertisement

পিএমএলএ কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের বিড়ম্বনা বৃদ্ধি করতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। নির্দেশে বলা হয়, যে সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এবং ইক্যুইটি শেয়ার ইডি দ্বারা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, তা বেআইনি পথে আয় এবং অর্থ পাচারের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত।

সরকারি সূত্রের খবর, ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্র, তার প্রকাশনা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেট (এজেএল) এবং পরিচালন তথা মালিক সংস্থা ইয়ং ইন্ডিয়ার স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে এই তালিকায়। ২০০৮ সালে সংবাদপত্রটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। সেই অবস্থাতেই সংস্থাটি অধিগ্রহণ করে সনিয়া, রাহুল এবং শীর্ষস্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’ সংস্থা।

যার পর ন্যাশনাল হেরাল্ডের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ইয়ং ইন্ডিয়ার দখলে চলে আসে। ৯০ কোটি টাকা দেনার বোঝাও চাপে তাদের ঘাড়ে। এর কিছু দিন পর ‘দেনার টাকা উদ্ধার করা সম্ভব নয়’ বলে কারণ দেখিয়ে কংগ্রেসের তরফে ঋণের টাকা মকুব করে দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, জওহরলাল নেহরু প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্র নিয়ে ২০১৩ সালে, মনমোহন সিংহের জমানাতেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়। যার মূল হোতা ছিলেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর অভিযোগ, ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড’ নামে যে সংস্থার হাতে সংবাদপত্রটির মালিকানা ছিল, বাজারে ৯০ কোটি টাকা দেনা ছিল তাদের। যার বেশির ভাগটাই কংগ্রেসের কাছ থেকে নেওয়া।

কংগ্রেসের তরফে ঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বামী আদালতে জানিয়েছিলেন, কংগ্রেস রাজনৈতিক দল। তাদের কোনও কর দিতে হয় না। কোনও বাণিজ্যিক সংস্থাকে ঋণ দেওয়াও তাদের এক্তিয়ারের বাইরে। এই মালিকানা হস্তান্তরে বেআইনি লেনদেন হয়েছিল কি না, তার তদন্তের জন্য ২০১৫-র গোড়ায় ইডিকে নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লির মেট্রোপলিটন আদালত। পাশাপাশি আইটিও-র দফতর থেকে কোনও পত্রিকা প্রকাশিত হয় না, এই যুক্তি দিয়ে এজেএল-কে দফতর খালি করতে বলেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। হাই কোর্টও ২০২২ সালে সেই সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছিল।

যদিও কংগ্রেস নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, ইয়ং ইন্ডিয়া অলাভজনক সংস্থা। এই সংস্থা কোনও মালিককে ডিভিডেন্ড (মুনাফার ভাগ) দিতে পারে না। কোনও সম্পত্তির হাতবদল বা আর্থিক লেনদেনও হয়নি। বস্তুত, প্রথম দফার তদন্তের পর ইডি কংগ্রেসের দাবিকেই মান্যতা দিয়ে মামলাটি বন্ধ করার সুপারিশ করেছিল। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত খারিজ করে তড়িঘড়ি ইডি-র তৎকালীন অধিকর্তা রাজন কাটোচকে সরিয়ে দিয়েছিল মোদী সরকার। এই মামলায় ২০২২-এ সনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডির তদন্তকারী দল। হানা দেওয়া হল ন্যাশনাল হেরাল্ডের নানা দফতরেও।

আরও পড়ুন
Advertisement