বাঁ’দিকে এমকে স্ট্যালিন, ডানদিকে অমিত শাহ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
জনসংখ্যার ভিত্তিতে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস হলে তামিলনাড়ু আট জন সাংসদ খোয়াতে পারে বলে বুধবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন। বিষয়টিকে ‘রাজ্যেবাসীর অধিকারে হস্তক্ষেপ’ বলে চিহ্নিত করে এ বিষয়ে প্রতিবাদ সংগঠিত করতে আগামী ৫ মার্চ সর্বদল বৈঠকের ডাক দিয়েছেন তিনি।
এই আবহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুধবার তামিলনাড়ু সফরে গিয়ে স্ট্যালিনের অভিযোগ খারিজ করলেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগেই লোকসভায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে সীমানা পুনর্বিন্যাসের পরেও, দাক্ষিণাত্যের কোনও রাজ্যের আসন কমানো হবে না।’’ তবে আগামী বছর থেকে জনসংখ্যার উপর ভিত্তি করে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
২০২৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার আসন পুনর্বিন্যাস করে লোকসভা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে নিতে পারে বলে বিরোধীরা আশঙ্কা করছে। জনসংখ্যা অনুযায়ী লোকসভায় সাংসদ সংখ্যাও বৃদ্ধি হওয়ার কথা। তা হলে হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলি থেকে লোকসভার আসন সংখ্যা অনেকটা বাড়বে। কারণ ওই রাজ্যগুলিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনামূলক হার বেশি। অন্যদিকে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম হওয়ায় দক্ষিণের রাজ্যগুলির সাংসদ সংখ্যা তেমন বাড়বে না।
এর ফলে গোটা প্রক্রিয়ায় বিজেপির লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা। বস্তুত, বুধবার শাহ তামিলনাড়ুর আসন কমবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও সাংসদ সংখ্যার বৃদ্ধিতে উত্তর ভারতের লাভবান হওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে কিছুই বলেননি। প্রতিশ্রুতি দেননি দক্ষিণ ভারতের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব কমার সম্ভাবনা রোধেরও। সংবিধান অনুসারে, জনসংখ্যা অনুযায়ীই সাংসদ সংখ্যা ঠিক হওয়া উচিত। সাধারণ ভাবে, প্রতি ১০ লক্ষ ভোটার পিছু একটি করে লোকসভা আসন বরাদ্দের নীতি মেনে চলা হয়।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ৯৬ কোটির বেশি ভোটার ছিলেন। সেই হিসেবে লোকসভায় প্রায় ৯৬০ জন সাংসদ থাকার কথা। এখন লোকসভায় আসন সংখ্যা ৫৪৩ জন। যদিও নতুন সংসদ ভবনে প্রায় ৯০০ আসনের লোকসভা কক্ষ তৈরি হয়েছে। আসন পুনর্বিন্যাসে প্রতি ১০ লক্ষ ভোটারের জন্য এক জন সাংসদের নীতি বজায় রাখতে হলে, লোকসভা কেন্দ্রের সীমানা বদলাতে হবে। কিন্তু বিরোধীদের আশঙ্কা বিজেপির সুবিধামতো পুনর্বিন্যাস হবে আসনের। স্ট্যালিন এ প্রসঙ্গে আশঙ্কা প্রকাশ করে মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির উপর খাঁড়া ঝুলছে।’’