Manipur Violence

অশান্ত মণিপুর, পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও ছ’টি থানা এলাকায় নতুন করে জারি করা হল আফস্পা

বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিম ইম্ফল, পূর্ব ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, কাংপোকপি এবং জিরিবাম জেলার ছ’টি থানা এলাকায় নতুন করে আফস্পা চালু করা হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:০৬
মণিপুরের ছয় থানায় নতুন করে বলবৎ হল আফস্পা।

মণিপুরের ছয় থানায় নতুন করে বলবৎ হল আফস্পা। ছবি: পিটিআই।

গত কয়েক দিনে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মণিপুর। জিরিবাম, পশ্চিম ইম্ফল, বিষ্ণুপুর-সহ একাধিক জেলায় সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ বার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্য জুড়ে ছ’টি থানা এলাকায় নতুন করে চালু করা হল ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা)।

Advertisement

বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিম ইম্ফলের সেকমাই ও লামসাং, পূর্ব ইম্ফলের লামলাই, বিষ্ণুপুরের মইরাং, কাংপোকপির লেইমাখং এবং জিরিবাম থানা এলাকায় নতুন করে আফস্পা চালু করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত মাসের শুরুতেই মণিপুরে ছ’মাসের জন্য বর্ধিত হয়েছিল আফস্পা-র মেয়াদ। ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, জিরিবাম-সহ ১৯টি থানা এলাকা বাদ দিয়ে গোটা রাজ্যেই এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এ বার আরও ছ’টি থানায় বলবৎ হল সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন। ওই ছ’টি এলাকাকে ‘অশান্ত অঞ্চল’ বলে অভিহিত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ছ’টি থানা এলাকায় নিরাপত্তা বজায় রাখতে এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করতেই এই পদক্ষেপ।

গত ৭ নভেম্বর গভীর রাতে জিরিবাম জেলার জ়াইরন গ্রামে হামলা চালায় এক দল দুষ্কৃতী। সারা রাত ধরে চলে লুটপাট, অত্যাচার এবং দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব। গ্রামের অন্তত ১৭টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। স্বামীর সামনেই ধর্ষণ করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তিন সন্তানের মা এক মহিলাকে। অভিযোগ, হামলা চালিয়েছিল মেইতেই সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাম্বাই টেঙ্গল এবং ইউএনএলএফের যৌথ দল। সেই ঘটনার পর থেকেই উত্তপ্ত জিরিবাম জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসীরা। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হন কুকি, জ়োমি, মার গোষ্ঠীর নেতারা। মেইতেই গ্রামগুলিতেও হামলা শুরু হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ঘরবাড়ি। পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবার রাত থেকে কার্ফু জারি হয় জিরিবাম জেলায়। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পূর্ব ইম্ফল জেলার থামনাপোকপি, সাবুংখোক এবং সানসাবি-সহ বিভিন্ন এলাকাও।

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই মণিপুরে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে প্রচুর গোলাবারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ও আধাসেনার যৌথ দল।

১৯৮০ সাল থেকেই আফস্পা-র আওতায় মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাকে ‘অশান্ত অঞ্চল’ বলে অভিহিত করা হয়ে এসেছে। ২০০৪ সালে থাংজাম মনোরমার ধর্ষণ ও হত্যার পর ব্যাপক প্রতিবাদের জেরে ইম্ফলের কয়েকটি জায়গায় আফস্পা আইন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

Advertisement
আরও পড়ুন