Delhi Murder

বান্ধবীর দেহ টুকরো করে ফ্রিজে, কাটা মাথা দেখতেন রোজ! ওয়েব সিরিজ দেখে ‘অনুপ্রাণিত’ হন আফতাব

যে ঘরে খুন করে শ্রদ্ধার দেহ টুকরো টুকরো করেছিলেন, সেখানেই রোজ রাতে ঘুমোতেন আফতাব। রোজ রাতে ফ্রিজে রাখা শ্রদ্ধার কাটা মাথা দেখতেন। দেহের টুকরো ফেলে দেওয়ার পর ফ্রিজটি ধুয়েও রেখেছিলেন।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৩১
বিবাদের জেরে ১৮ মে গলা টিপে শ্রদ্ধাকে খুন করেন আফতাব বলে অভিযোগ।

বিবাদের জেরে ১৮ মে গলা টিপে শ্রদ্ধাকে খুন করেন আফতাব বলে অভিযোগ। — ফাইল ছবি।

লিভ-ইন সঙ্গীকে খুনের পর ঠান্ডা মাথায় প্রমাণ লোপাট করেছিলেন আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। শ্রদ্ধা ওয়ালকারের দেহটাই হাপিস করেছিলেন তিনি। সেটাও করেছিলেন ছক কষে, ঠান্ডা মাথায়। তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে দিল্লি পুলিশ। তাদের দাবি, এই সবটাই আফতাব করেছিলেন অপরাধ নিয়ে ছবি আর সিরিজ দেখে। সে সব থেকেই খুনের প্রমাণ লোপাটের ছক কষেছিলেন।

অভিযোগ, ছ’মাস আগে ২৭ বছরের লিভ-ইন সঙ্গী শ্রদ্ধাকে খুন করেছিলেন ২৮ বছরের আফতাব। প্রেমিকার দেহ ৩৫ টুকরো করেছিলেন। তার পর দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সেই টুকরো। শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার গ্রেফতার হন আফতাব। তাঁকে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। ধৃতকে জেরা করে পুলিশ জেনেছে, অপরাধ নিয়ে সিরিজ ‘ডেক্সটার’ দেখতেন তিনি।

Advertisement

আমেরিকার এই জনপ্রিয় সিরিজ ২০০৬ থেকে ২০১১ পর্যন্ত চলেছিল। সিরিজের নায়ক ডেক্সটার মর্গান পুলিশের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ছিলেন। অবসর সময়ে খুন করে বেড়াতেন। ওই সিরিজ দেখেই ছক কষেছিলেন আফতাব।

পুলিশ জানিয়েছে, আফতাব আদতে মুম্বইয়ের বাসিন্দা। আর শ্রদ্ধাও মুম্বইয়ের মেয়ে। একটি কল সেন্টারে কাজ করার সময় ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে আলাপ হয় দু’জনের। দক্ষিণ দিল্লির অতিরিক্ত ডিসিপি অঙ্কিত চৌহান জানিয়েছেন, গত তিন বছর আগে এক সঙ্গে থাকতে শুরু করেন আফতাব এবং শ্রদ্ধা। এর পরেই মুম্বই ছেড়ে দিল্লি চলে আসেন। এর পরেই বিয়ের জন্য আফতাবকে চাপ দিতে শুরু করেন শ্রদ্ধা। সেই নিয়ে রোজই চলত ঝামেলা।

চৌহানের কথায়, ‘‘১৮ মে দু’জনের ঝামেলা চরমে ওঠে। রাগের বশে শ্রদ্ধার গলা টিপে খুন করেন আফতাব। এর পর মেয়েটির দেহ টুকরো টুকরো করে ছাতারপুর জঙ্গল এলাকায় ফেলে আসেন।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রদ্ধার দেহের ৩৫টি টুকরো করেছিলেন আফতাব। এর পর একটি ফ্রিজ কিনে আনেন তিনি। সেখানেই ভরে রাখেন দেহের টুকরো। পরের ১৮ দিন ধরে রাতের অন্ধকারে দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে দেহের টুকরো ফেলে আসতেন আফতাব বলে অভিযোগ।

সূত্রের খবর, যেই ঘরে খুন করে শ্রদ্ধার দেহ টুকরো টুকরো করেছিলেন, সেখানেই রোজ রাতে ঘুমোতেন আফতাব। রোজ রাতে ফ্রিজে রাখা শ্রদ্ধার কাটা মাথা দেখতেন। দেহের সব টুকরো ফেলে দেওয়ার পর ফ্রিজটি ধুয়েমুছেও রেখেছিলেন আফতাব। আরও জানা গিয়েছে, শ্রদ্ধার আগে আরও অনেক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল আফতাবের।

সেপ্টেম্বরে শ্রদ্ধার এক বন্ধু তাঁর পরিবারকে জানান যে, আগের আড়াই মাস ধরে কোনও খোঁজ মেলেনি তরুণীর। এমনকি তাঁর মোবাইলও সুইচড অফ। এর পরেই শ্রদ্ধার পরিবার সমাজমাধ্যমে তাঁর অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখেন। দেখা যায়, আগের আড়াই মাস কোনও পোস্ট দেননি তিনি। নভেম্বরে শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ মদন ওয়ালকার মুম্বই পুলিশের দ্বারস্থ হন। আফতাবের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্কের কথাও জানান। এর পরেই মুম্বই পুলিশ শ্রদ্ধার ফোনের তথ্য খতিয়ে জানতে পারেন, দিল্লিতে গিয়েছিলেন তিনি। তদন্তভার হাতে নেয় দিল্লি পুলিশ। শনিবার ধরা পড়েন আফতাব। জেরায় স্বীকার করেন, বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন বলেই শ্রদ্ধাকে খুন করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন
Advertisement