খলিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিংহের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে নতুন মামলা রুজু হল। ফাইল চিত্র।
‘পলাতক’ খলিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিংহের বিরুদ্ধে এ বার অস্ত্র আইনে নতুন মামলা রুজু করল পঞ্জাব পুলিশ। ওই মামলায় স্বঘোষিত শিখ ধর্মগুরুর ৭ ঘনিষ্ঠ সহচরের নামও রয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্রের খবর। ওই সূত্র জানাচ্ছে, এনআইএ (জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার) আইনে ওই মামলা রুজু করা হয়েছে। ফলে বিষয়টি তদন্তের ভার যেতে পারে এনআইএর কাছে।
যদিও এখনও পর্যন্ত অমৃতপালকে গ্রেফতার করতে পারেনি পঞ্জাব পুলিশ। সূত্রের খবর, শনিবার অমৃতপাল বাইকে চড়ে পুলিশের চোখের সামনে থেকেই পালিয়ে যান। তবে অমৃতপালের সংগঠন ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ (বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘পঞ্জাবের উত্তরাধিকারী’)-এর দাবি, আটক করে গোপন স্থানে তাঁকে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। সাজানো সংঘর্ষে তাঁকে খুন করা হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
সরকারি হিসাব বলছে, পঞ্জাবে পুলিশি অভিযানে শনিবার থেকে এ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ৭৮ জনকে। তার মধ্যে ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ সংগঠনের চার নেতাকে বায়ুসেনার বিমানে আজ অসমের ডিব্রুগড়ে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। দেশের অন্যতম উচ্চ-নিরাপত্তার ডিব্রুগড় কেন্দ্রীয় কারাগারে তাঁদের রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা রবিবার বলেন, ‘‘এটা পুলিশের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপার। অসমে কোনও অভিযুক্তকে ধরার পরে নিরাপত্তার জন্য অনেক সময় বিহারের ভাগলপুর জেলেও পাঠানো হয়ে থাকে। তেমনই, হয়তো পঞ্জাব পুলিশ ক’দিন বন্দিদের অসমে রাখার কথা ভেবেছে।’’
ফেব্রুয়ারি মাসে আজনালার থানায় হামলার ঘটনার জেরেই ‘ভাই সাব’ (অনুগামীদের কাছে এই নামেই পরিচিত অমৃতপাল) এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের গ্রেফতারের জন্য সক্রিয় হয়েছে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের সরকার। শনিবার সকালে মোগা এলাকা থেকে অমৃতপালের সংগঠনের ছ’জন নেতাকে আটক করে পুলিশ। তার পরেই খলিস্তানপন্থী নেতাকে ধরতে তৎপরতা শুরু হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, বার বার পোশাক আর গাড়ি বদলে নাগাল থেকে ফস্কে যাচ্ছেন অমৃতপাল। জালন্ধরে তাঁর ছেড়ে যাওয়া তেমন গাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধারও হয়েছে। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, অভিযানের আগে থেকে পালাতে শুরু করায় কয়েক কদম এগিয়ে থাকছেন অমৃতপাল।
তবে থানায় হামলার ঘটনার এক মাস পরে অভিযান হলেও অমৃতপাল তার আঁচ পেলেন কী করে, সেই বিষয়ে নীরব পুলিশকর্তারা। প্রকাশিত একটি খবরে দাবি, পঞ্জাবের নেশামুক্তি কেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসাধীন যুবকদের মানববোমা বানানোর পরিকল্পনা করেছিলেন অমৃতপাল! গোয়েন্দা সূত্রে সেই খবর পেয়েই শনিবার থেকে তাঁকে গ্রেফতারের তৎপরতা শুরু হয়।