অমৃতপাল সিংহ। ফাইল চিত্র।
একাধিক ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত স্বঘোষিত শিখ ধর্মগুরু তথা খলিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিংহকে পঞ্জাবে আত্মঘাতী হামলার ষড়যন্ত্র করছেন বলে পুলিশের একটি সূত্রে জানানো হয়েছে। ওই সূত্রের দাবি, পঞ্জাবের নেশামুক্তি কেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসাধীন যুবকদের মানববোমা বানানোর পরিকল্পনা করেছেন অমৃতপাল! গোয়েন্দ সূত্রে সেই খবর পেয়েই শনিবার থেকে তাঁকে গ্রেফতারের তৎপরতা শুরু হয়েছিল।
যদিও শেষ পর্যন্ত অমৃতপালকে গ্রেফতার করতে পারেনি পঞ্জাব পুলিশ। সরকারি বিবৃতি জানাচ্ছে, অনুযায়ী, অমৃতপাল বাইকে চড়ে পুলিশের চোখের সামনে থেকেই পালিয়ে গিয়েছেন। তবে অমৃতপালের সংগঠন ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ (বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘পঞ্জাবের উত্তরাধিকারী’)-এর দাবি, আটক করে গোপন স্থানে তাঁকে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। সাজানো সংঘর্ষে তাঁকে খুন করা হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে আজনালা হিংসার জেরেই ‘ভাই সাব’ (অনুগামীদের কাছে এই নামেই পরিচিত অমৃতপাল) এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের গ্রেফতারের জন্য সক্রিয় হয়েছে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের সরকার। শনিবার সকালে মোগা এলাকা থেকে অমৃতপালের সংগঠন ছ’জন নেতাকে আটক করে পুলিশ। তার পরেই খলিস্তানপন্থী নেতাকে ধরতে তৎপরতা শুরু হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, অমৃতপালকে জালন্ধরের শাহকোট এলাকার মেহতপুর গ্রামে ঘিরে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’-র প্রধানের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্রধারী দেহরক্ষীরা রয়েছেন। রক্তপাত এবং প্রাণহানির ঝুঁকি এড়াতে তাই গ্রামে ঢোকার ক্ষেত্রে সাবধানতা বজায় রখা হয়েলি। সে সুযোগে পালিয়ে গিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি অমৃতপাল ঘনিষ্ঠ লভপ্রীত সিংহ তুফানকে দাঙ্গা এবং অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল অমৃতসরের আজনালা থানা। তার পরই আজনালায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। লভপ্রীতকে ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে থানা ঘেরাও করেন ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’-র সমর্থকরা। লাঠি, তরোয়াল এবং বন্দুক নিয়ে কয়েকশো সমর্থক থানার ব্যারিকেড ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েছিলেন। হামলায় জখম হয়েছিলেন বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী।
প্রয়াত রাজনীতিক দীপ সিধু পঞ্জাবের জনগণের দাবিদাওয়া নিয়ে লড়ার জন্য ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ গড়েছিলেন। ২০২২-এ তাঁর মৃত্যুর পর সংগঠনের দায়িত্ব নেন আশির দশকের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা জার্নেল সিংহ ভিন্দ্রানওয়ালের ভক্ত অমৃতপাল।