লোকসভা ভোটের আগে মায়াবতী-অখিলেশ দ্বন্দ্ব বাড়ছে উত্তরপ্রদেশে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই তিক্ততা বাড়ছে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) এবং বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)-র। ‘মহাগঠবন্ধন’ ভুলে কার্যত পুরনো চির-প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক অবস্থানই ফিরে এসেছেন অখিলেশ যাদব এবং মায়াবতী। বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের’ প্রশ্ন শিকেয় তুলে ফের যুযুধান প্রতিপক্ষ হিসাবেই পরস্পরের দিকে এগোচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
গত ১২ মার্চ উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরে একটি জনসভায় অখিলেশ বলেছিলেন, ‘‘মায়াবতীয় দল বিজেপির বি-টিম হিসাবে কাজ করছে।’’ পাল্টা এ বার মুখ খুললেন উত্তরপ্রদেশে দলিত নেত্রী। তাঁর অভিযোগ, অখিলেশ প্রয়াত পিতা তথা সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মুলায়ম সিংহ যাদব বিজেপির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। অখিলেশও বিজেপি নেতৃত্বের আশীর্বাদধন্য বলে দাবি করেন মায়াবতী। কিছু দিন আগে অখিলেশের বৈমাত্রেয় ভাই প্রতীকের স্ত্রী অপর্ণা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। সে প্রসঙ্গে খোঁচা দিয়ে টুইটারে মায়াবতীর লিখেছেন, ‘‘মুলায়ম পরিকল্পনা করে ২০২৭ সালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগী আদিত্যনাথকে দিয়ে অখিলেশকে আশীর্বাদ করেছিলেন এবং পরিবারের একজন সদস্যকে বিজেপিতে পাঠিয়েছিলেন।’’
প্রসঙ্গত, বিজেপিকে ঠেকাতে লোকসভা ভোটে মহাগঠবন্ধন করে বিএসপি এবং সমাজবাদী পার্টি (এসপি)। সঙ্গে ছিল অজিত সিংহের রাষ্ট্রীয় লোক দল। কিন্তু ভোটে শোচনীয় ফল হয় মহাজোটের। মায়াবতীর দল বিএসপি-র ঝুলিতে ১০টি আসন। অখিলেশের দল পায় মাত্র ৫টি। এর পরই মহাজোটে কার্যত ইতি টেনে দিয়েছিলেন মায়াবতী। তাঁর অভিযোগ ছিল, দলিতদের ভোট এসপি পেলেও যাদব ভোট বিএসপির ঝুলিতে আসেনি। কিন্তু ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ভোটে একা লড়তে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে মায়াবতীর দল।
২০১৭-র বিধানসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে ১৯টি আসনে জিতেছিল বিএসপি। ২০২২-এ তা নেমে এসেছে ১-এ। চলতি বছরের গোড়ায় এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, মায়াবতী কি এনডিএ-তে যোগ দেবেন? সরাসরি জবাব এড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কোনও সমঝদার ব্যক্তি কি টিভির সামনে এ কথা বলবেন?’’ তার পরেই উত্তরপ্রদেশের প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি ধারাবাহিক ভাবে আক্রমণ করছে মায়াবতীকে। কলকাতায় এসে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপি বিরোধী ঐক্যবদ্ধ লড়াই নিয়ে আলোচনা হলেও প্রস্তাবিত সেই মঞ্চে যে বিএসপির ঠাঁই হচ্ছে না তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।