ছত্তীসগঢ়ে ২৬ মাওবাদীর আত্মসমর্পণ। ছবি: সংগৃহীত।
কেন্দ্রীয় আধাসেনা এবং পুলিশের যৌথ অভিযানে, ছত্তীসগঢ়, মহারাষ্ট্রে ধারাবাহিক ভাবে মৃত্যু হচ্ছে মাওবাদী গেরিলাদের। আর সেই সঙ্গে বাড়ছে আত্মসমর্পণের প্রবণতাও। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন ছত্তীসগঢ়ের বস্তার ডিভিশনের দন্তেওয়াড়া জেলার তিন মাওবাদী কমান্ডার-সহ ২৬ জন গেরিলা। কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের কাছে আন্তসমর্পণ করলেন তাঁরা।
পুলিশ জানিয়েছে, তিন মাওবাদী কমান্ডারের মাথার দাম ছিল সাড়ে চার লক্ষ টাকা। দন্তেওয়াড়ার পুলিশ সুপার গৌরব রাই সোমবার বলেন, ‘‘অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং নাশকতার আদর্শের প্রতি মোহভঙ্গের কারণেই এঁরা আত্মসমর্পণ করে সমাজের মূল স্রোতে শামিল হচ্ছেন।’’ তিনি জানান, নিষিদ্ধ সিপিআই (মাওবাদী)-র সশস্ত্র শাখা পিএলজিএ (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি)-র বস্তার ডিভিশনে সক্রিয় বিভিন্ন দলমের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত ছিলেন আত্মসমর্পণকারী ২৬ নেতা-কর্মী।
পুলিশ জানাচ্ছে, আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীরা জনমিলিশিয়া, বিপ্লবী পার্টি কমিটি (আরপিসি), ‘জনতানা সরকার’, দণ্ডকারণ্য আদিবাসী কিসান মজদুর সংগঠন (ডিএকেএমএস) এবং চেতনা নাট্যমণ্ডলীর (সিএনএম) মতো শাখা সংগঠনগুলির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত। এঁদের আত্মসমর্পণ নিরাপত্তা বাহিনীকে বাড়তি মনোবল জোগাবে বলেও পুলিশ সুপারের দাবি। ছত্তীসগঢ় ‘নিয়া নার নিয়া পুলিশ’ (আমাদের গ্রাম, আমাদের পুলিশ) প্রচার কর্মসূচির ফলেই এই সাফল্য বলে তাঁর দাবি।
আত্মসমর্পণকারী তিন নেতার মধ্যে রাজেশ কাশ্যপ আমদই অঞ্চলের জনমিলিশিয়া কমান্ডার হিসেবে সক্রিয় ছিলেন, তাঁর মাথার দাম ছিল তিন লক্ষ টাকা। অন্য দিকে, জনতানা সরকার স্কোয়াডের প্রধান কোসা মাদভী এবং সিএনএম-এর নেতা ছোটু কুঞ্জামের উপর যথাক্রমে এক লক্ষ টাকা এবং ৫০,০০০ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল ছত্তীসগঢ় পুলিশ। মাওবাদীদের মূল স্রোতে ফেরাতে ২০২০ সালের জুন মাসে ‘লোন ভারাতু’ (গোন্ড ভাষায় যার অর্থ ‘বাড়ি ফিরুন’) কর্মসূচি শুরু হয়েছিল ছত্তীসগঢ়ে। এখনও পর্যন্ত ৯৫৩ জন মাওবাদী অস্ত্র ছেড়ে ওই সরকারি পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় শামিল হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।