হেঁশেলের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জিনিস হল প্লাস্টিকের চপিং বোর্ড। ছবি: সংগৃহীত।
ধারালো বঁটি, ছুরি, ভাঙা কাচের কাপ কিংবা গরম কড়াই নয়। হেঁশেলের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জিনিস হল প্লাস্টিকের চপিং বোর্ড। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা থেকে অন্তত তেমনটাই জানা যাচ্ছে।
‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’-তে প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে, মানবদেহে মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্বের সবচেয়ে বড় কারণ হল প্লাস্টিকের চপিং বোর্ড। চিকিৎসকেরা বলছেন, প্লাস্টিকের চপিং বোর্ডে থাকা ‘মাইক্রোপ্লাস্টিক্স’ থেকে নানা রকম শারীরিক জটিলতা হতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্লাস্টিকের চপিং বোর্ডের উপর শাকসব্জি, মাছ-মাংস কিংবা ফল কাটলে তার মধ্যে সহজেই মাইক্রোপ্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ ঢুকে যায়।
এই মাইক্রোপ্লাস্টিক কিন্তু হাওয়া, বাতাস, জল, এমনকি মাটির সঙ্গেও মিশে রয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, আকারে ৫ মিলিমিটারেরও কম এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণাগুলি রক্তবাহের মধ্যে দিয়ে বাহিত হয়ে হার্টের ধমনীর দেওয়ালে জমা হয়। ফলে হার্টে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয় এবং স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যেতে পারে। তবে শুধু প্লাস্টিকের চপিং বোর্ড নয়, খাবার প্যাকিং করার বাক্স, বরফ জমানোর ট্রে কিংবা প্লাস্টিকের ব্যাগ থেকেও মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে মিশতে পারে।
প্লাস্টিকের বদলে কী ব্যবহার করা যেতে পারে?
দামে কম এবং ব্যবহারের সুবিধা থাকলেও প্লাস্টিকের চপিং বোর্ড শরীরের জন্য মোটেই ভাল নয়। বদলে পাথর, কাঠ, বাঁশ কিংবা কাচের চপিং বোর্ড ব্যবহার করা যেতে পারে।
রক্তে বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা হেরফের হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। আমেরিকার নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক বলেছেন, কাঠের বা প্লাস্টিকের বোর্ডের উপর সব্জি কাটলে, সেখানে প্রায় কোটিখানেক বিষাক্ত মাইক্রোপার্টিকল্স উৎপন্ন হয়। সব্জি কাটার সময়ে ছুরির গায়ে লেগে থাকা ‘পলিপ্রপাইলিন’ এবং ‘পলিথিন’এর ক্ষুদ্র অংশ শরীরে গিয়ে নানা রকমের সমস্যা হতেই পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ব্যবহার করা চপিং বোর্ডের উপর ‘স্যালমোনেল্লা’র মতো ব্যাক্টেরিয়া থাকা অস্বাভাবিক নয়। এই ধরনের ব্যাক্টেরিয়া শরীরে প্রবেশ করলে পেটের অসুখ হওয়া স্বাভাবিক।