Blood Sugar Monitoring

রক্তে শর্করার মাত্রা ওঠানামা করছে? বাড়িতে কখন মাপলে সঠিক ফল পাবেন?

ডায়াবিটিসের রোগীরা আজকাল বাড়িতে শর্করার মাত্রা পরিমাপ করে নেন। তবে জানতে হবে দিনে ঠিক কখন ও কত বার মাপলে সঠিক ‘রিডিং’ পাওয়া যাবে?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৪ ১২:১২
When is the best time to check blood sugar level

কোন কোন সময়ে ব্লাড সুগার মাপবেন? ছবি: ফ্রিপিক।

ডায়াবিটিস এখন প্রায় ঘরে ঘরে। প্রাপ্তবয়স্কেরা শুধু নন, শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে ডায়াবিটিসে। শিশুদের অনেকের মধ্যেই টাইপ ১ ডায়াবিটিসের লক্ষণ ধরা পড়ছে। অর্থাৎ তাদের অগ্ন্যাশয় সম্পূর্ণ ভাবে ইনসুলিন ক্ষরণ বন্ধ করে দিয়েছে। সাধারণত টাইপ ১ ডায়াবিটিস বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জন্মগত। আর টাইপ ২ ডায়াবিটিসের জন্য দায়ী মূলত অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। এই রোগ কিন্তু চুপিসারে আসে, আচমকাই একদিন ডালপালা মেলে দেয়। রক্তে শর্করা বাড়ছে কি না, তা জানার অনেক পদ্ধতি এখন আছে। বাড়িতেও তা মাপা যায়। ডায়াবিটিসের রোগীদের যদি রক্তে শর্করার মাত্রা ওঠানামা করতে শুরু করে, তা হলে দিনে একাধিক বার তা মাপার দরকার হতে পারে। না হলে, নির্দিষ্ট সময়ে ‘সুগার লেভেল’ মাপলেই চলে।

Advertisement

অনেকেই হয়তো জানেন না, দিনের কোন নির্দিষ্ট সময়ে রক্তে শর্করার মাত্রা মেপে নেওয়া ভাল। কত দিন পর পর সেটা পরিমাপ করা জরুরি, তা-ও জেনে রাখা উচিত।

চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী জানাচ্ছেন, ডায়াবিটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে দিনের মধ্যে অন্তত ৬ বার রক্তে শর্করার পরিমাণ পরীক্ষা করা উচিত। সকালে উঠে খালি পেটে প্রথম বার পরীক্ষা করতে হবে। তবে তার জন্য আগের দিন রাতে অন্তত ১০ ঘণ্টা আগে খাবার খেয়ে নিতে হবে আপনাকে। প্রাতরাশের ২ ঘণ্টা পরে আবারও পরীক্ষা করা জরুরি।

বিশদে জানুন কোন কোন সময়ে ‘সুগার’ মাপবেন

১) সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পরীক্ষা করতে হবে। রাতের খাওয়ার সঙ্গে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার তফাত রাখতে হবে।

২) প্রাতরাশ সারার ২ ঘণ্টা পরে ফের মাপতে হবে।

৩) দুপুরের খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে এক বার মেপে নেওয়া জরুরি।

৪) দুপুরের খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে মাপতে হবে।

৫) রাতে খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে মাপুন।

৬) রাতে খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর আরও একবার।

খাবার খাওয়ার আগে এবং খাবার খাওয়ার পর শর্করার পরিমাণ উনিশ-বিশ হয়ে যায়। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যদি খাওয়ার আগে ও পরে মাত্রার এদিক-ওদিক অধিক হয়, দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

চিকিৎসকেদের মতে, বাড়িতে মাপতে পারলেই বেশি ভাল। তা হলে সারা দিনে কত বার মাপছেন, শর্করার মাত্রা কত থাকছে তার হিসেব থাকবে। তবে শুধু মাপলেই হবে না। সেই ‘রিডিং’ লিখেও রাখতে হবে। কয়েক দিন এই নিয়মে মাপার পর যদি দেখা যায়, রক্তে শর্করার মাত্রা ওঠানামা করছে তা হলে সেই ‘রিডিং’ নিয়ে যেতে হবে চিকিৎসকের কাছে।

অবশ্য দিনে ৬ বার শর্করার মাত্রা পরিমাপ করার এই নিয়ম সকলের জন্য নয়। যাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা আচমকা কমে যায়, অর্থাৎ হাইপোগ্লাইসেমিয়া আছে, অথবা যাঁদের খুব কড়া ডোজ়ে ইনসুলিন নিতে হয়, তাঁদের এই নিয়ম মেনে চলা উচিত। তা হলে ওষুধ বা ইনসুলিনের ডোজ় ঠিক করতে সুবিধা হবে চিকিৎসকেদের। আর যাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে,তাঁদের ১৫ দিন অন্তর অথবা মাসে এক বার মাপলেই চলবে।

এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। যাঁদের ডায়াবিটিস আছে,ইনসুলিন নিতে হয় তাঁরা ঠিক কখন ও কতবার শর্করার মাত্রা মাপবেন, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।

Advertisement
আরও পড়ুন