Indian Men and Potbellies

নাদুসনুদুস ভুঁড়িটি নাকি সুখের লক্ষণ! ভারতীয় পুরুষদের সেই ‘সুখ’ আসলে অসুখ নয় তো?

মধ্যবয়সি ভারতীয় পুরুষ, কিন্তু ভুঁড়ি নেই, এ যেন সোনার পাথরবাটি। বয়স যত বেড়েছে, কারও ভুঁড়ি কলসি থেকে ক্রমশ জালার আকার ধারণ করেছে। আপাত ভাবে নিরীহ, সুখী ভুঁড়ি কি আদৌ ভাল?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৪ ১৯:১০
What’s the secret behind Indian men and their potbellies

দামোদর শেঠের মতো ভুঁড়ি আপনারও আছে? ছবি: সংগৃহীত।

সুখী পুরুষের লক্ষণ কী? মস্ত বড় একটা টাক না কি হৃষ্টপুষ্ট একটা ভুঁড়ি? নিন্দকেরা হয়তো বলবেন টাকা। তবে সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের চোখে সুখী পুরুষ চেনার উপায় কিন্তু ওই ভুঁড়িটিই। সমীক্ষা বলছে, এই ভুঁড়ি যেন ভারতীয় পুরুষদেরই সম্পত্তি। মধ্যবয়সি ভারতীয় পুরুষ কিন্তু ভুঁড়ি নেই, এ যেন সোনার পাথরবাটি। বয়স যত বেড়েছে, কারও ভুঁড়ি কলসি থেকে ক্রমশ জালার আকার ধারণ করেছে। তার জন্য যে ‘দামোদর শেঠ’-এর মতো মন মন খাবার খেতে হচ্ছে, এমনটা কিন্তু নয়। তা হলে মধ্যবয়সি পুরুষদের এই গোপন সুখের রহস্যটা কী? চিকিৎসকেরা বলছেন, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এই ভুঁড়ি আড়ে-বহরে বেড়ে ওঠে খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপন এবং পরিবেশের জন্য। আপাত ভাবে নিরীহ দেখতে হলেও কিন্তু বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে যে কোনও সময়ে।

Advertisement

এই সমস্যার মূলচক্রী কে?

পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই ধরনের সমস্যার জন্য দায়ী মূলত হরমোন। হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে বিপাকহারজনিত সমস্যা দেখা দেয়। যার ফল পেট, কোমরে চর্বির মোটা স্তর। এ ছাড়া, শরীরে প্রোজেস্টেরন, ইস্ট্রোজেনের মতো হরমোনের হেরফের হলেও কিন্তু ইনসুলিনের কার্যকারিতা নষ্ট হয়। পুষ্টিবিদদের বক্তব্য, ভারতীয়দের খাবারের তালিকায় প্রোটিন কম, কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে। বিশেষ করে যাঁরা নিরামিষ খান, তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি। কার্বোহাইড্রেট বেশি খেলে রক্তে ইনসুলিন হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। এবং তা সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না। বরং তা শরীরে জমতে থাকে। দীর্ঘ দিন ধরে ইনসুলিন জমতে জমতে তা গ্লুকোজ় এবং পরবর্তী কালে মেদে পরিণত হয়।

আবার, বিপাকহার ভাল না হলে অন্ত্রে ভাল ব্যাক্টেরিয়ার ঘাটতি দেখা দেয়। যার ফলে অন্ত্রে গ্লুকোজ়ের বিপাকক্রিয়া থমকে যায়। অতিরিক্ত গ্লুকোজ় থেকেও পেটের তলদেশে মেদ জমার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। সে কারণেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রোবায়োটিক যুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

নিয়মিত মদ্যপান করার অভ্যাসও রয়েছে অনেকের। অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় বেশি খেলে লিভারেও মেদ জমতে পারে। পেটের উপরের দিকে চর্বির পরত বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফ্যাটি লিভারের উপসর্গ বলে ধরা হয়। মনের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়লেও কিন্তু হরমোনে হেরফের হতে পারে। পেটে মেদ জমার নেপথ্যে এটিরও ভূমিকা রয়েছে।

এই ‘সুখ’ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় আছে?

জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে না পারলে এই ধরনের সমস্যা বাড়তেই থাকবে। বয়সের সঙ্গে দায়দায়িত্বও বৃদ্ধি পায়। সব দিক সামলাতে গিয়ে অনেক সময়ে শরীরচর্চাও করা হয় না। যার ফলে ভুঁড়ির আকার বাড়তে থাকে। ডায়েট থেকে স্টার্চ, কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যালোরিযুক্ত খাবার বাদ দিয়ে প্রোটিন খেতে হবে বেশি করে। সঙ্গে ফলমূল, শাকসব্জিও রাখতে হবে। এ ছাড়া, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল আয়ত্ত করতে পারলেও কাজ হবে।

আরও পড়ুন
Advertisement