মুলোশাক শরীরের জন্য ভাল। ছবি: সংগৃহীত।
বাড়িতে মুলো সেদ্ধ হলে গোটা পাড়া সে খবর জেনে যায়। এমনই তার গন্ধ, থুড়ি দুর্গন্ধ! আবার অনেক বাড়িতে মুলো খাওয়া হলেও তার মাথার উপরে থাকা শাকপাতাগুলো ফেলে দেওয়া হয়। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, শীতের শুরুতে এই সব্জি খাওয়ার অনেক উপকারও রয়েছে। মুলোর মতো এই সব্জির কচি পাতা বা শাকের গুণ কম নয়। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতেও সাহায্য করে মুলোপাতা। ফোলেট, ফাইবার, রাইবোফ্ল্যাবেন, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ় এবং ক্যালশিয়ামের মতো খনিজ রয়েছে এই শাকে। মুলোশাক খেলে শরীরের আর কী কী উপকার হয়?
১) রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখে:
ডায়াবিটিসের সঙ্গে যাঁরা দীর্ঘ দিন ঘর করছেন, তাঁরা জানেন রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। মুলোর কচি পাতায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা অন্ত্র থেকে গ্লুকোজ় শোষণে বাধা দেয়। মুলোপাতায় রয়েছে ফাইবার, যা কার্বোহাইড্রেট পরিপাকের গতিও শ্লথ করে দেয়।
২) রক্ত পরিস্রুত করে:
মুলোশাক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ, যা রক্ত থেকে দূষিত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। রক্তে জমা টক্সিন দূর করতে এবং ফ্রি র্যাডিক্যালের সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে গোটা শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। কোষ ক্ষয়ে যাওয়া কিংবা রক্তবাহিকার ক্ষতিও আটকে দিতে পারে।
৩) রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করে:
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হল ভিটামিন সি। মুলোশাক এই ভিটামিনে উৎস। রোগ প্রতিরোধে শ্বেত রক্তকণিকার যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। মুলোশাক কিন্তু এই রক্ত কণিকা উৎপাদনেও সহায়তা করে। এ ছাড়া এই শাক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানে সমৃদ্ধ। ফলে প্রদাহজনিত সমস্যা রুখে দিতেও মুলোশাকের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
৪) হার্টের জন্য ভাল:
প্রদাহজনিত সমস্যা, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে থাকলে হার্ট ভাল থাকে। রক্তে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা স্বাভাবিক থাকলে হার্টের ধমনীতে কোনও ভাবে ‘প্লাক’ বা চর্বি জমতে পারে না। মুলোশাকে রয়েছে ফাইবার এবং পটাশিয়াম। যা উপরে উল্লিখিত সমস্যাগুলোর পাশপাশি পটাশিয়ামের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৫) চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখে:
মুলোশাকে রয়েছে ‘লুটেইন’ এবং ‘জ়িশানথিন’ নামক দু’টি উপাদান। এগুলি আসলে ক্যারোটিনয়েড, যা শরীরে গিয়ে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়ে যায়। ফলে দৃষ্টিশক্তি ভাল থাকে। ‘ম্যাকিউলার ডিজেনারেশন’ বা চোখের বার্ধক্যজনিত যে সমস্যা, তার গতিও শ্লথ করে দেয় এই শাক।