বছরের প্রথম থেকেই শুরু হোক সুস্থ থাকার প্রস্তুতি। ছবি সৌজন্যঃ শৌভিক দেবনাথ।
বড়দিনের উৎসব, বর্ষবরণের হইহুল্লোড়, আনন্দ-উচ্ছ্বাসের পর্ব শেষ। এ বার নতুন বছর নতুন ভাবে শুরু করার পালা। ব্যক্তিগত জীবনে বদল আনার পাশাপাশি, শরীরের যত্নেও দরকার পরিবর্তন। কারণ, সুস্থ থাকা সবচেয়ে জরুরি। কাজের গুণমান থেকে মনের ভালমন্দ— সব কিছু নির্ভর করে শারীরিক অবস্থার উপর। তাই বছরের প্রথম থেকেই শুরু হোক সুস্থ থাকার প্রস্তুতি। খাওয়াদাওয়া থেকে শরীরচর্চা— সবই থাকবে সে তালিকায়। তবে একটু আলাদা ভাবে। শরীরের খেয়াল রাখতে বানিয়ে নিন স্বাস্থ্যকর রুটিন। কেমন হবে নতুন বছরে সুস্থ থাকার রোজনামচা?
সারা দিনের খাবার আগে থেকে ঠিক করুন
সকাল থেকে রাত— সারা দিনের প্রতিটি মিল যেন খাওয়ার আগে ঠিক করবেন না। তাতে বিভ্রান্ত হয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে নেওয়ার আশঙ্কা থাকে। বরং আগের রাতেই পরের দিনের খাবারের তালিকাটি তৈরি করে রাখুন। সেই তালিকায় যেন বিকাল কিংবা সন্ধ্যার জলখাবারও বাদ না পড়ে যায়। ঘড়ি ধরে এবং নিয়ম মেনে খাওয়ার কিছু বাড়তি সুবিধা রয়েছে। সন্ধ্যাবেলায় কাজের ফাঁকে খিদে পাওয়া স্বাভাবিক। সেই মুহূর্তে হাতের কাছে কিছু না পেয়ে রোল, মোগলাই, কাটলেটে কামড় বসিয়ে ফেলেন অনেকেই। তাতে রসনাতৃপ্তি হলেও, শরীরের কোনও লাভ হয় না। খিদে পেলে যাতে খাবারের খোঁজ করতে না হয়, সেই ব্যবস্থাটি নতুন বছর থেকে শুরু করুন। আখেরে লাভ আপনারই।
সব সময়ে সঙ্গে খাবার রাখুন
অফিস গেলে তো বটেই, তা ছাড়াও টুকিটাকি কাজ সারতে বাইরে গেলেও বিস্কুট, ড্রাই ফ্রুটস, বাদামের মতো কিছু খাবার সঙ্গে রাখুন। তা ছাড়া, বাড়িতে খিদে পেলেও এই খাবারগুলিই খান। সব সময়ে অনলাইনে অর্ডার করে মুখরোচক খাবার খাওয়া শরীরের জন্য ভাল নয়। ফ্রিজেও যেন মরসুমি ফল, সব্জি মজুত থাকে।
শরীরচর্চার অভ্যাস বজায় রাখুন
স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে শরীরচর্চার ভূমিকা নিয়ে বলা বাহুল্য। বছরশেষের আনন্দ উদ্যাপনে সে সব হয়তো কিছু দিনের জন্য শিকেয় উঠেছিল। তবে নতুন বছরে শরীরচর্চা যেন বন্ধ না হয়। শরীরচর্চা করা নিয়ে অনেকেরই নানা ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। ব্যায়াম, যোগাসন করা মানেই অনেকটা সময়ের ধাক্কা— এমনই ভাবেন অনেকে। সময় বাঁচাতে তাই সে সব এড়িয়ে চলেন। তেমনটা করলে চলবে না। প্রতি দিন অল্প সময়ের জন্য হলেও শরীরচর্চা করুন। সারা সপ্তাহে ১৫০ মিনিট শরীরচর্চা যথেষ্ট।
মন দিয়ে খাবার খাওয়া
খাওয়ার সময়ে টিভি দেখা, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গল্প করার চল রয়েছে অনেক বাড়িতেই। পুষ্টিবিদদের মতে, নতুন বছরে সুস্থ থাকতে এই অভ্যাসেও বদল আনা প্রয়োজন। খিদে মেটানোই খাওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে না। অমনোযোগী হয়ে খাবার খেলে বেশি কিংবা কম খেয়ে নেওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাতে হজমের গোলমাল দেখা দিতে পারে।
খাবারের পরিমাণ কমান
বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তরাঁয় খেতে গিয়েছেন। টেবিল ভর্তি দেশি-বিদেশি সব খাবার। ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে একটুও চেখে দেখবেন না, তো হয় না। খেতেই পারেন। তবে পরিমাণটা যেন বেশি না হয়ে যায়, সে দিকে খেয়াল রাখুন। সব খাবারই খেতে পারেন, তবে পরিমাণে অল্প খেলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।