মুম্বই পুরনিগমের তথ্য অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৯৯ জন শিশু হামে আক্রান্ত হয়েছেন। ছবি: শাটারস্টক
হামে আক্রান্ত হয়ে এক বছর বয়সি এক খুদের মৃত্যু হয়েছে মুম্বইতে। মুম্বই পুরনিগম সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ১২৬ জন শিশু হামে সংক্রমিত হয়েছে। রিপোর্টে অনুযায়ী, মুম্বইয়ের নল বাজার এলাকার বাসিন্দা এক শিশু কস্তুরবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। হামের সংক্রমণ দেখা দিতেই ওই শিশুকে কস্তুরবা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকাকালীনই ওই শিশুর মৃত্যু হয় বলে খবর। চিকিৎসকদের মতে, হামের কারণে বৃক্কে সংক্রমণ হয়েই মৃত্যু হয়েছে শিশুটির।
মুম্বই পুরনিগমের তথ্য অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৯৯ জন শিশু হামে আক্রান্ত হয়েছেন।
কস্তুরবা হাসপাতালে একটি বিশেষ বিভাগ প্রস্তুত করা হয়েছে শিশুদের হামের চিকিৎসার জন্য। পুরনিগমের খবর অনুযায়ী, ৪ থেকে ১৪ নভেম্বরের মধ্যে কস্তুরবা হাসপাতালের বিশেষ বিভাগে মোট ৬১ জন শিশুর পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হয়। প্রত্যেকেই হামে সংক্রমিত। তবে ১২ জন শিশুর অবস্থা সঙ্কটজনক দেখে হাসপাতালে ভর্তি করে নেওয়া হয় বলে জানা যায়।
পুরনিগমের তরফে অভিভাকদের কাছে অবিলম্বে ৯ থেকে ১৬ বছরের কিশোর-কিশোরীদের হামের টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা করানোর আর্জি জানানো হয়। পাশাপাশি জ্বর, সর্দি, কাশির পাশাপাশি শরীরে র্যাশ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সাধারণত ঋতু পরিবর্তনের সময়েই হাম প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। তবে বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে এখন এই সব রোগ হওয়ারও কোনও নির্দিষ্ট সময় নেই। যখন তখন এর প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। যেহেতু এই জাতীয় রোগগুলি ভাইরাস সংক্রমণ দ্বারা হয়ে থাকে, তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগগুলির ভাইরাস অনুকূল পরিবেশ পেয়ে আক্রমণ করে। মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরে নির্ভর করে, ভাইরাসের আক্রমণে শরীর কতটা প্রভাবিত হবে।
হাম বা বসন্তের সাধারণ উপসর্গ কী?
যেহেতু ভাইরাস ‘কালচার’ করা এখনও সম্ভব হয়ে উঠেনি, তাই এই সব ভাইরাল রোগগুলি মূলত রোগের উপসর্গ বা লক্ষণ দেখেই শনাক্ত করতে হয়। প্রাথমিক ভাবে জ্বর, সর্দি, হাঁচি, চোখ লাল হওয়া, কিছু ক্ষেত্রে চোখের পাতা ফুলে যাওয়া, সারা শরীরে তীব্র ব্যথা দেখা যায়। পরবর্তী পর্যায়ে গায়ে বিভিন্ন আকারের দানা ও আরও পরে জলভর্তি ফোস্কার মতো বড় আকারের দানা বা পুঁজ সমেত বড় আকারের দানাও দেখা যায়। ৩-৪ দিনের মাথায় ওই দানাগুলি আস্তে আস্তে মিলিয়ে যায় এবং শরীর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠে।
হাম হলে কী কী ধরনের বিপদের আশঙ্কা থাকে?
হাম বা বসন্তের কারণে সাধারণত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাময়িক কমে যায়। সচেতন না হলে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, কাশি, পেটের গোলমাল দেখা দিতে পারে। কোনও পুরনো বা জটিল রোগ থাকলে বসন্ত হওয়ার ফলে তা আরও বাড়তে পারে। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে কোনও কোনও ক্ষেত্রে প্রাণহানির আশঙ্কাও থেকে যায়।
চিকিৎসকদের মতে, করোনার কারণে হাম, রুবেলা, মাম্পসের টিকাকরণের কাজ যথেষ্ট ব্যহত হয়েছে। সেই কারণেই বেশি করে বাড়ছে ভাইরাসের সংক্রমণ।