ছবি: সংগৃহীত।
বিছানা থেকে মাটিতে পা ফেলতে পারছেন না। ঘুম থেকে ওঠার পর থেকেই এমন অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে। প্রথমে ইউরিক অ্যাসিড মনে হলেও যন্ত্রণার তীব্রতা দেখে তা মনে হচ্ছে না। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই ধরনের কষ্টের উৎপত্তিস্থল কিন্তু সায়াটিকা স্নায়ু। দেহের সবচেয়ে মোটা এবং দীর্ঘতম স্নায়ু হল সায়াটিকা। যার উৎসস্থল হল মেরুদণ্ড। সেখান থেকে কোমর হয়ে একেবারে পায়ের পাতা পর্যন্ত তা বিস্তৃত।
বসা-শোয়ার ভুল ভঙ্গি, পড়ে যাওয়া কিংবা ভারী জিনিস তোলার সময়ে কোনও ভাবে সেই স্নায়ুতে আঘাত লাগলে এমন অসহ্য যন্ত্রণা হতে পারে। কারও আবার আলপিন ফোটার মতো অনুভূতি হয় সারা ক্ষণ। ব্যথা কমানোর ওষুধ তো সারা জীবনের সঙ্গী হতে পারে না! তা হলে উপায়? সঠিক চিকিৎসার পাশাপাশি নিয়মিত কয়েকটি আসন অভ্যাস করলে এই কষ্ট নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
১) সুপ্ত পবনমুক্তাসন
প্রথমে ম্যাটের উপর টান টান হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাত রাখুন দেহের দু’পাশে। এ বার ডান হাঁটু ভাঁজ করে পেট এবং বুকের কাছে নিয়ে আসুন। দুই হাত দিয়ে হাঁটু ধরে রাখার চেষ্টা করুন। সেই সঙ্গে মাথা এবং গ্রীবা তুলে আনতে হবে হাঁটুর কাছে। বাঁ পা যেন মাটিতে একেবারে টান টান ভাবে থাকে। এই ভঙ্গি ধরে রাখুন ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড। শ্বাস-প্রশ্বাস যেন স্বাভাবিক থাকে।
১০-১৫ সেকেন্ড পর ডান পা সোজা করে স্বাভাবিক অবস্থায় রাখুন। এ বার বাঁ হাটু ভাঁজ করে একই ভাবে অভ্যাস করুন সুপ্ত পবনমুক্তাসন।
২) সুপ্ত মৎস্যেন্দ্রাসন
অনেকেই এই ভঙ্গিকে ‘স্পাইনাল টুইস্ট’ নামেও চেনেন। এই আসন অভ্যাস করার জন্য প্রথমে ম্যাটের উপর সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন। পায়ের পাতা যেন একেবারে সমকোণে বা ৯০ ডিগ্রিতে থাকে। এ বার ডান হাঁটু ভাজ করে বাঁ হাঁটুর কাছাকাছি রাখুন। ধীরে ধীরে কোমর থেকে নিম্নাঙ্গ বাঁ দিকে ঘুরিয়ে নিন। গ্রীবা থেকে মাথা ডান দিকে, অর্থাৎ ঠিক তার উল্টো দিকে ঘোরাতে হবে। কোমরে প্যাঁচ অনুভব করবেন। এই অবস্থায় অন্তত পক্ষে ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড থাকতে হবে।
ভাঁজ করা পা স্বাভাবিক অবস্থানে রাখার পর একই ভাবে অন্য পায়েও এই ব্যায়াম অভ্যাস করতে হবে।
৩) কন্ধরাসন
অনেকেই এই আসনকে সেতুবন্ধনাসন বা ব্রিজ পোজ় নামে চেনেন। তবে দেখতে একই রকম হলেও এই আসন সেতুবন্ধনাসনের থেকে একটু আলাদা। প্রথমে ম্যাটের উপর সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন। এ বার দুই হাঁটু ভাঁজ করে নিতম্বের কাছাকাছি নিয়ে যান। পায়ের পাতার উপর ভর করে কোমর, পিঠ উপরের দিকে তুলে ধরুন। দুই হাত দিয়ে গোড়ালি স্পর্শ করুন। একেবারে ব্রিজ পোজ়ের মতোই। এ বার পিঠও ধীরে ধীরে উপর দিকে তুলতে চেষ্টা করুন। গোটা দেহের ভর থাকবে দুই বাহু, কাঁধ এবং মাথার উপর। এই ভঙ্গি ধরে রাখতে হবে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড। শ্বাস-প্রশ্বাস যাতে স্বাভাবিক থাকে, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।