Causes of Fatigue and Exhaustion

অল্পেই ক্লান্তি, বিরক্তি ভাব? কাজ করতে বসলেই ঝিমুনি, রোজের কোন কোন অভ্যাস আলস্য বাড়াচ্ছে?

মনোবিদেরা জানাচ্ছেন, প্রতি দিন সকাল থেকে রাত অবধি, এমন কিছু কাজ প্রায় প্রত্যেকেই করেন, যা আলস্য ও ক্লান্তি ভাব বাড়িয়ে দিচ্ছে অনেকটাই। কী কী সেই অভ্যাস?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪২
These Lifestyle habits that can cause lethargy

কেন ক্লান্তি ভাব বাড়ছে, কারণ জানলে চমকে যাবেন। ছবি: ফ্রিপিক।

আলস্যটা ঝেড়ে ফেলা যাচ্ছে না কিছুতেই। সকালে চোখ খুলে আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতেই যেন ক্লান্তিটা ফিরে আসে। রাতে ঘুমের পরেও কেন যে এত ক্লান্তি, তা বুঝতেই বুঝতেই অফিস যাওয়ার সময়টা এসে যায়। কোনও রকমে শরীরটাকে টেনে কাজকর্ম সেরে অফিসে তো গেলেন, সেখানেও কি কাজে মন বসছে? কাজ করার আগ্রহই যেন নেই, সারা ক্ষণ ঝিমুনি আসছে। মনঃসংযোগও কমছে দিনে দিনে। অতিরিক্ত আলসেমি শরীর ও মনের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে। কেন হচ্ছে এমন?

Advertisement

রোজের কিছু অভ্যাসই এর জন্য দায়ী। মনোবিদেরা জানাচ্ছেন, প্রতি দিন সকাল থেকে রাত অবধি, এমন কিছু কাজ প্রায় প্রত্যেকেই করেন, যা আলস্য ও ক্লান্তি ভাব বাড়িয়ে দিচ্ছে অনেকটাই। কী কী সেই অভ্যাস?

মনোরোগ চিকিৎসক শর্মিলা সরকারের কথায়, নানা দিকে মাথা ঘামানো ও একই সময়ে একসঙ্গে বিভিন্ন কাজ করার চেষ্টা সবচেয়ে বড় কারণ। যেমন, মোবাইল দেখতে দেখতেই অফিসের কাজ করার চেষ্টা অথবা যে সময়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন সেই সময়েও মোবাইল বা ট্যাবে নানা রকম জিনিস স্ক্রল করতে থাকা। এই অভ্যাস মস্তিষ্কের উপর প্রভাব ফেলে। ফলে কোনও কাজেই মন বসে না। মনের উপর চাপও বাড়তে থাকে। শর্মিলার পরামর্শ, কাজের সময় ভাগ করে নেওয়া জরুরি। বিরতি নিয়ে কাজ করা আবশ্যক। আর বিরতির সময়ে চারদিকে নজর না দিয়ে বরং মন ও মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দিতে হবে। বৈদ্যুতিন যন্ত্র থেকে দূরে থাকতে হবে। তা হলেই পরবর্তী কাজের উৎসাহ পাওয়া যাবে।

সকালে ঘুম চোখ খুলেই মোবাইল ফোন ঘাঁটাঘাঁটি করলে তা শরীর ও মনের উপর বড় প্রভাব ফেলে। স্মার্টফোন ব্যবহার করলে ফোনের নীল আলো মস্তিষ্কে ‘মেলাটোনিন’ নামক হরমোনের নিঃসরণে বাধা দেয়। এই হরমোন ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে বেশি মোবাইল ঘাঁটলে ঘুমের সমস্যা দেখা দেবে। উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা এতটাই বেড়ে যাবে যে, অনিদ্রাজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে। আর ক্লান্তি ভাব তো বাড়বেই।

পর্যাপ্ত ঘুম না হলেও যেমন শরীর খারাপ হয়, তেমনই প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুমোলেও কিন্তু সমস্যা তৈরি করতে পারে। ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’-এর একটি গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, বয়স এবং শারীরিক সক্রিয়তা অনুযায়ী ৭-৯ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। এর বেশি ঘুমোলেই, বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) বাড়বে, মানসিক নানা সমস্যা দেখা দেবে এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও বাড়তে থাকবে। ফলে আলস্য ভাব যেমন বেড়ে যাবে, তেমনই আরও নানা শারীরিক সমস্যাও দেখা দেবে।

নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করলে মনের চাপ বাড়বে। দুশ্চিন্তা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণই হল এই অভ্যাস। মনোবিদের কথায়, দিনভর সমাজমাধ্যমের পাতায় চোখ রেখে অন্যের জীবনযাপন, রুচি, অভ্যাস অনুকরণের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই প্রবণতা মনে নেতিবাচক ভাবনার জন্ম দেয় যা ‘স্ট্রেস হরমোন’ কর্টিসোলের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। এই হরমোনের তারতম্য হলেই শরীর ও মনের ক্লান্তি কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। তাই নিজের গুণ, বৈশিষ্ট্যগুলি বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করুন। কাজে ও ভাবনায় নতুনত্ব আনুন। তা হলেই ভাল থাকা যাবে।

Advertisement
আরও পড়ুন