কতটা ক্যালশিয়াম শরীরের জন্য জরুরি? ছবি: ফ্রিপিক।
রোজের খাবারে ভিটামিনের পাশাপাশি ক্যালশিয়াম-ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ উপাদান রাখতেই হয়। না হলে পুষ্টির ঘাটতি থেকে যাবে। কিন্তু অনেকেই ভাবেন, রোজের খাবার থেকে ক্যালশিয়ামের চাহিদা পূরণ হবে না। তাই ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্ট খেতে শুরু করেন। বিশেষ করে যাঁরা দুধ কিংবা দুগ্ধজাত খাবার খেতে পারেন না, তাঁরাই এই ধরনের সাপ্লিমেন্ট বেশি খান। কিন্তু ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্ট যদি প্রয়োজনের বেশি খাওয়া হয়, তা হলে তা কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, জানা আছে কি?
হার্টের চিকিৎসক দিলীপ কুমার জানাচ্ছেন, ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্ট বেশি খেয়ে ফেললে হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়বে। যাঁরা প্রতি দিন বেশি করে এই সাপ্লিমেন্ট খান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই একটানা খেয়ে যান, তাঁদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক বেশি।
মাত্রাতিরিক্ত ক্যালশিয়াম শরীরে প্রবেশ করলে তা থেকে ক্যালশিয়াম ডিপোজ়িট জমা হতে পারে। গলব্লাডার স্টোন, কিডনি স্টোন থেকে শুরু করে হার্ট ব্লক হওয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে। হার্টে রক্ত বয়ে নিয়ে যায় যে ধমনী, তাতে অতিরিক্ত ক্যালশিয়াম জমে ব্লকেজ তৈরি করতে পারে। ফলে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত চলাচল বাধা পেয়ে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বহু গুণে বেড়ে যেতে পারে।
ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্টের সঙ্গে কেউ যদি নিয়মিত হার্টের অসুখের ট্যাবলেট বা আয়রন ট্যাবলেট খেতে শুরু করেন, তা হলে হৃদ্রোগের সম্ভাবনা বাড়ে। এ ক্ষেত্রে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাবের মতো উপসর্গ দেখা যায়।
ক্যালশিয়াম ঠিক কতটা খাওয়া জরুরি?
মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানিয়েছেন, ১৯ থেকে ৫০ বছর বয়সিদের ক্যালশিয়ামের প্রয়োজনীয়তা প্রত্যেক দিন কমবেশি ১০০০ মিলিগ্রাম। ৫১ থেকে ৭০ বছর বয়সি মহিলাদের এই প্রয়োজনীয়তা আবার ১২০০ মিলিগ্রাম। আড়াইশো মিলিলিটার দুধ, একটি ডিম, একশো-দেড়শো গ্রাম মাছ আর সবুজ শাকসব্জি থেকে এই ঘাটতি মেটানো সম্ভব।
আর ক্যালশিয়াম ট্যাবলেট যদি খেতেই হয়, তা হলে ওষুধ ও রোজের খাওয়ার মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হবে। ট্যাবলেট যদি ৫০০ মিলিগ্রামের হয়, তা হলে খাবার সেই মতো ব্যালান্স করতে হবে। অতিরিক্ত হলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
চিকিৎসকের কথায়, একটানা কোনও সাপ্লিমেন্টই খাওয়া উচিত নয়। মাস তিনেক খেয়ে একটু বিরতি দিয়ে আবার শুরু করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই শরীর বুঝে ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। সেই সময়ে খাবারের মাধ্যমে দৈনিক চাহিদা যাতে পূরণ হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।