অতিরিক্ত ধূমপানের ফলে ক্যানসারের মতো মারণ রোগ থাবা বসায় শরীরে। ছবি: সংগৃহীত
ধূমপানের অভ্যাস সহজে ছাড়া যায় না। সেই কোন কাল থেকে ধূমপান করেন। এত বছর পেরিয়ে এসেও আজও সেই অভ্যাস লালন পালন করে যাচ্ছেন। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, অফিসের সহকর্মী, এমনকি চিকিৎসকের বারণও ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে সুখটান দিয়ে চলেছেন। এ দিকে ধূমপানের অভ্যাস শরীরের অন্দরে যতটুকু ক্ষতি করার, তা করে চলেছে। মাসখানেক আগে করোনার বাড়বাড়ন্তের সময় চিকিৎসকরা ধূমপায়ীদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি, তা জানিয়েছিলেন। শ্বাসনালীর প্রকৃতি খুবই নরম। শ্বাসনালীর মধ্যে এমন অনেক কোষ থাকে যেগুলি রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তোলে। ঘন ঘন ধূমপান করার ফলে সেই কোষগুলি পুড়ে যায়। ফলে ওই স্থানের প্রদাহ হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায় অনেকাংশে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে থাকে।
অতিরিক্ত ধূমপানের ফলে ক্যানসারের মতো মারণ রোগ থাবা বসায় শরীরে। এ ছাড়াও হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়ার মতো সমস্যারও সৃষ্টি করে।
চিকিৎসকদের মতে, সুস্থ জীবনযাপন করতে ধূমপানের অভ্যাস জীবন থেকে বাদ দেওয়া একান্তই জরুরি। তবে আজকে ধূমপান বন্ধ করে দিলে কাল থেকে সব ঠিক হয়ে যাবে না। ধূমপানের ফলে শরীরের ভিতরে যতটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তার সবটা হয়ত ক্ষতিপূরণ হবে না। তবে এখন ধূমপান ছাড়লে ক্ষতির পরিমাণ আর বেশি দূর এগোবে না।
কী উপায়ে ত্যাগ করবেন ধূমপানের অভ্যাস?
পারিপার্শ্বিক মানুষের ক্ষতি হচ্ছে
ধূমপান যিনি করেন তাঁর যেমন স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে যায়। তেমনই পরোক্ষ ধূমপানের ফলে আশপাশে থাকা মানুষেরও স্বাস্থ্যহানি ঘটছে। যা একে বারেই কাম্য নয়। ধূমপান ত্যাগ করে নিজেকে এবং চারপাশের মানুষজনকেও সুস্থ রাখুন।
খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনে বদল আনুন
গবেষণা বলছে, আমিষ এবং মাংসজাতীয় খাবার খাওয়ার পরেই মূলত ধূমপান বেশি উপভোগ্য হয়ে ওঠে। তাই ধূমপান ত্যাগ করতে চাইলে কিছু দিন বেশি করে ফলমূল ও শাকসব্জি খেতে পারেন। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। বিশেষ করে যোগাসন, প্রাণায়ামের অনুশীলন বেশি করে করতে পারেন। নিয়মিত শরীরচর্চার অভ্যাস ধূমপান করা থেকে আপনাকে বিরত রাখবে।
মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন
অ্যালকোহল মিশ্রিত পানীয়, কোমল পানীয়, চা বা কফি খাওয়ার পরে যোগ্য সঙ্গত হিসাবে ধূমপান করে থাকেন। ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে চাইলে প্রথমে এই ধরনের পানীয় এড়িয়ে চলুন।
পছন্দের স্বাদের চকোলেট খেতে পারেন
ধূমপানের অভ্যাস বদলে ফেলুন চকোলেট খেয়ে। চকোলেট বা চিউইং গাম খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হলে ধূমপানের আগ্রহ চলে যাবে।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
খারাপ হোক বা ভাল, দীর্ঘ দিনের অভ্যাস ত্যাগ করতে সময় লাগে। নিজের চেষ্টায় ধূমপানের আসক্তি ত্যাগ করতে না পারলে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।