রোজের কিছু অভ্যাস স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে। ছবি: ফ্রি পিক।
রোজের ব্যস্ততায় টুকটাক ভুলে যাওয়া আকছার ঘটেই থাকে। বাইরে বেরোনোর সময় টাকার ব্যাগটা ফেলে গেলাম, মোবাইলটা কোথায় রেখেছি মনে করতে কালঘাম ছুটে গেল। এমনকি বাজারের ফর্দ মিলিয়ে কিনতে গিয়েও ভুলে ফেলে আসি বাজারের ব্যাগটা।
ভুলে যাওয়ার ঘটনা মাঝেমধ্যে হলে ঠিক আছে, কিন্তু যদি তা ঘন ঘন হতে থাকে তখন চিন্তার কারণ রয়েছে। আমাদের মগজের অনেকটাই ঘিরে রেখেছে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা, মানসিক চাপ, উদ্বেগ। যে কারণে মস্তিষ্কের কুঠুরিগুলি ভরে উঠে টইটম্বুর হয়ে যায়। তার উপর রোজকার জীবনযাপনে নানা অসংযম তো আছেই। সব মিলিয়ে স্মৃতির পাতা ক্রমে ধূসর হতে বসে।
মনোবিদেরা পরামর্শ দিচ্ছেন, রোজের যাপনে এমন কিছু অভ্যাস রপ্ত করতে হবে যাতে বুদ্ধির বিকাশ ঘটবে, স্মৃতিশক্তিও উন্নত হবে। কী কী সেই অভ্যাস?
১. মেডিটেশন
প্রতি দিন নিয়ম করে অন্তত ১৫ মিনিট ধ্যান করা শরীর ও মন দুইয়ের জন্যই ভাল। ব্যস্ত সময়ে কাজের চাপ যেমন বাড়ছে, তেমনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মনের চাপও। বর্তমান সময়ের সব চেয়ে বড় সমস্যা অবসাদ। এর হাত ধরেই আসছে মন ও মস্তিষ্কের আরও অনেক জটিল রোগ। মনের অসুখে বেশি ভুগছেন কমবয়সিরাই। চিকিৎসকেরা তাই পরামর্শ দিচ্ছেন, সারা দিনের কাজকে সময় ধরে ভাগ করে নিন। তার মধ্যে অবশ্যই কিছুটা সময় বার করে ধ্যান করুন। এতে মনঃসংযোগও বাড়বে।
২. নেশাই সর্বনাশা
অতিরিক্ত নেশা মানসিক চাপের কারণ হতে পারে। কিন্তু নেশাতুর মানুষ উল্টোটাই ভাবেন। কাজের চাপ বাড়লে বা উদ্বেগ বাড়লে সিগারেটে সুখটান দিয়ে মনে করেন চাপ কমবে? নিকোটিন কিছুটা সময়ের জন্য মাথা হালকা করে দেয় ঠিকই, কিন্তু দীর্ঘ দিনের নেশার অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদি অবসাদের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
৩. ঠিক করে ঘুমোচ্ছেন তো?
আপনার ঘুম কি খুব পাতলা? রাতে বার বার ঘুম ভেঙে যায়? তা হলে সেটা ভাল লক্ষণ নয়। কম ঘুম বা অনিদ্রার সমস্যা থাকলে তার থেকেই শরীরে বাসা বাঁধতে পারে নানা রোগ। রাতভর ল্যাপটপ, মোবাইলে সিনেমা, সিরিজ় দেখা, কানে হেডফোন গুঁজে গান শোনা ঘুমের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। মনোবিদেদের পরামর্শ, রাতে টানা ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম দরকার সকলেরই। তা হলেই মস্তিষ্ক বিশ্রাম পাবে, স্মৃতিশক্তিও বাড়বে।
৪. সুষম আহার
ভাত, রুটি, দুধ, মাছ, ফল, শাকসব্জি রোজকার খাবারে দরকার। বিভিন্ন রকম বাদাম খেতে হবে। বাইরের খাবার, বেশি তেল বা মশলা দেওয়া খাবার যত কম খাবেন ততই ভাল।
৫. নতুন কিছু শেখার ইচ্ছা
এখন বহু মানুষের অবসর সময়টা কাটছে সমাজমাধ্যমে। সেখানেও অন্যের জীবনযাপন পদ্ধতি দেখে ও তা অনুসরণ করতে গিয়ে অজান্তেই নিজের উদ্বেগ বেড়ে যায়। চাহিদাও বাড়ে। আর সে সব পূরণ না হলেই তার থেকে হতাশা দেখা দেয়। মনোবিদেরা বলছেন, নতুন কোনও কাজ শেখার চেষ্টা করলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে। প্রতিটি মানুষেরই নিজস্ব কিছু শখ থাকে। সেগুলি নিয়েও চর্চা করা উচিত। গান শোনা, লেখা, ছবি আঁকা, বাগান করা— এ সবও মনের চাপ কমায়। দাবা খেলুন। এতেও বুদ্ধির বিকাশ হয়।