গ্যাস-অম্বলের কোন ওষুধগুলি নিয়ে সমস্যা হয়েছিল? প্রায় সকলের বাড়িতেই থাকে এইসব ওষুধ। ছবি: ফ্রিপিক।
গ্যাস-অম্বলের ওষুধ র্যান্টিডিন এখনই নিষিদ্ধ হচ্ছে না ভারতে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ভারতে র্যান্টিডিন গোত্রের যে সব ওষুধ বিক্রি হয়, তাতে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া ওই গোত্রের ওষুধগুলি ফের ট্রায়াল দিয়ে দেখা হচ্ছে। নিরাপত্তার দিকটি পুরোপুরি খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থা। কাজেই ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুপ্রিয়া পটেল জানিয়েছেন, র্যান্টিডিন গোত্রের ওষুধগুলিতে কোনও রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না, সে দিকে সতর্ক নজর রেখেছে কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থা। পাশাপাশি, প্রতি রাজ্যে, জেলায় ওষুধের দোকানগুলিতে র্যান্টিডিন গোত্রের যত ওষুধ বিক্রি হচ্ছে, সেগুলির কিছু কিছু নমুনা নিয়ে এসে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করেও দেখা হচ্ছে। জ়োনাল অফিসারদের এই ব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
র্যান্টিডিন আসলে কী?
র্যান্টিডিন হল হিস্টামিন-২ ব্লকার গ্রুপের ওষুধ। ভারতে র্যানট্যাক, জ়িনট্যাক, অ্যাসিলক নামে বাজারে পাওয়া যায়। অম্বল, পেটব্যথা হলে এই ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। গ্যাস্ট্রোএসোফ্যাজ়িয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (জিইআরডি), গ্যাসট্রিক আলসারের রোগীদেরও এই ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় অনেক সময়ে। র্যান্টিডিন তৈরি করেছিল গ্ল্যাক্সো হোল্ডিংস লিমিটেড। এখন ওই সংস্থা গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন পিএলসির অংশ। ১৯৮৩ সালে আমেরিকায় ব্যবহারের ছাড়পত্র পায় র্যান্টিডিন। ক্রমে ৩১টি দেশ এই ওষুধকে ছাড়পত্র দেয়।
কিন্তু ২০১৯ সাল থেকে র্যান্টিডিন ওষুধ নিয়ে নানা রকম অভিযোগ উঠতে শুরু করে। আমেরিকার খাদ্য এবং ওষুধ নিয়ামক সংস্থা (এফডিএ) অভিযোগ করে, ক্যানসারের কারণ হতে পারে, এমন উপাদানের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে র্যান্টিডিনে। এই ওষুধ খেলে নানা রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে, এমন খবরও রটে। আমেরিকায় এই ওষুধ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয় ২০২০ সাল থেকে।
ভারতেও ওষুধটি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়। দাবি করা হয়, এই র্যান্টিডিনে রয়েছে এন-নাইট্রোসোডিমিথাইলামাইন (এনডিএমএ) নামক একটি উপাদান, যা পাকস্থলি, খাদ্যনালি, মূত্রাশয়ের ক্যানসারের কারণ হতে পারে। এর পর থেকেই নিষিদ্ধ ওষুধের তালিকায় যোগ করা হয় র্যান্টিডিনের নাম। কিন্তু বর্তমানে স্বাস্থ্যমন্ত্রক দাবি করেছে, ওই উপাদান খুবই সামান্য পরিমাণে পাওয়া গিয়েছে র্যান্টিডিনে। কাজেই ওষুধটি ওষুধটি নিয়ে তেমন ভয়ের কারণ নেই।