কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে এমনিতেই অনেক নিয়ম মেনে চলতে হয় রোজের জীবনে। প্রতীকী ছবি।
শুনতে সাধারণ লাগলেও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় যাঁরা ভোগেন, তাঁরা জানেন কতটা কষ্টকর এই শারীরিক সমস্যা। কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে এমনিতেই অনেক নিয়ম মেনে চলতে হয় রোজের জীবনে। শীতে এই সমস্যা যেন আরও বেড়ে যায়। এই মরসুমে এমনিতেই জল খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়। ফলে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়। যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। চিকিৎসকেরা এই সমস্যা কমাতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার কথা বলে থাকেন। পাশাপাশি, শরীরে জলের ঘাটতি হতে দিলেও চলবে না।
এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মুঠো মুঠো ওষুধ খান। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন,শুধু ওষুধে নয়, ঘরোয়া উপায়েও কিন্তু নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এই সমস্যা। সমাধান লুকিয়ে রয়েছে হেঁশেলেই। রান্নার একটি পরিচিত উপকরণ হল কালোজিরে। রান্নার স্বাদ বাড়িয়ে তোলার পাশাপাশি এই মশলা যত্ন নেয় শরীরেরও। কালোজিরের এমনিতেই অনেক স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, কালোজিরে কমাতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও। কালোজিরেতে থাকা অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান পেটের যে সমস্যাগুলি কমাতে সাহায্য করে তার মধ্যে অন্যতম হল কোষ্ঠকাঠিন্য। এ ছাড়া কালোজিরেতে রয়েছে ফাইবারের মতো উপাদান। যা হজমের সমস্যা দূর করে। পরিপাকক্রিয়া ঠিক রাখতে সাহায্য করে ফাইবার। হজম ঠিকঠাক হলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও অনেকটা কমে যায়। এ ছাড়াও বদহজম, গ্যাস, পেটফাঁপার মতো কিছু সমস্যাও কমে যায়। খুব ভারী কিংবা তেল-মশলাজাতীয় খাবার খাওয়ার পর কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা এড়াতে অল্প কালোজিরে চিবিয়ে খেতে পারেন। উপকার পাবেন। এ ছা়ড়া কালোজিরে ভেজানো জলও চাইলে খাওয়া যেতে পারে। সারা রাত একটি পাত্রে কালোজিরে জলে ভিজিয় রেখে দিন। পরের দিন সকালে সেই জল ছেঁকে খেয়ে নিতে পারেন। মিলবে সুফল।
কালোজিরে আর কী কী সমস্যা কমাতে পারে?
সর্দি-কাশি, নাকবন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা এড়াতে কালোজিরে দারুণ কার্যকরী। কালোজিরে সামান্য বেটে তার মধ্যে কয়েক ফোঁটা সর্ষের তেল ফেলে দিয়ে তা গরম ভাতের সঙ্গে খেতে পারেন। সর্দি-কাশি নিমেষে উবে যাবে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমবে। একটা সুতির কাপড়ে কালোজিরে বেঁধে তার গন্ধ শুকলেও সর্দি কমবে। এ ছাড়াও হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ব্রঙ্কাইটিস, অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দূরে থাকবে। তবে কালোজিরে কিন্তু সবার জন্য উপকারী ভূমিকা পালন করে না। কালোজিরে শরীর গরম করে দেয়। এই কারণে দিনে তিন গ্রামের বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়। বিশেষ করে যাঁরা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের কালোজিরে এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। অন্তঃসত্ত্বারাও কালোজিরে খেতে পারবেন কি না, সেই বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।