পায়ের শিরায় ঘন ঘন টান ধরার সমস্যা কমাতে পারে ভিটামিন কে? গবেষণায় দাবি বিজ্ঞানীদের। ছবি: ফ্রিপিক।
ঘুমের মধ্যে বা একটানা অনেক ক্ষণ বসে বা শুয়ে থেকে ওঠার সময়ে পিঠ ও পায়ের পেশিতে টান ধরে অনেকেরই। বিশেষ করে রাতে ঘুমোনোর সময়ে পায়ের শিরায় টান ধরে যাওয়ার সমস্যা কমবেশি অনেকেরই আছে। ঠান্ডার সময়ে এই সমস্যা আরও বাড়ে। বাড়ির বয়স্কেরা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন। আবার যাঁরা সারা দিন বাতানুকূল ঘরে একটানা বসে কাজ করেন, তাঁদেরও পায়ের শিরায় টান ধরে যাওয়ার সমস্যা বেশি দেখা যায়। রাতে ঘুমের মধ্যে শিরায় টান ধরে যন্ত্রণা শুরু হলে, তা কমতে অনেক সময় লাগে। পা অবশ হয়ে যায়।
‘জামা ইন্টারনাল মেডিসিন’ জার্নালে এই বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র ছাপা হয়েছে। গবেষকেরা দাবি করেছেন, পঞ্চাশোর্ধ্ব প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষজনই পায়ের শিরায় টান ধরার মতো সমস্যায় ভোগেন। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে কোনও ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই। কেবল পাতে রাখতে হবে ভিটামিন কে২ সমৃদ্ধ খাবার। বয়স ৫০ থেকে ৬৫, এমন ১৯৯ জনকে নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। সেখানে ১০৩ জনকে নিয়মিত ভিটামিন কে২ খাওয়ানো হয়। দেখা যায়, যাঁরা ভিটামিন কে২ খেয়েছিলেন তাঁদের পা, পিঠের ব্যথা, প্রদাহজনিত সমস্যা অনেক কমে গিয়েছে। ভিটামিন কে পেশি ও শিরার ব্যথা প্রদাহ কমাতে পারে বলেই দাবি গবেষকদের।
গরমে ঘাম হয়ে শরীর থেকে বেশি পরিমাণে জল বেরিয়ে যায় বলে শরীরে জলের ঘাটতি হয়। তাই ঘাটতি হয় পেশির স্থিতিস্থাপকতায়। শীতে আবার জল খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে ফেলেন অনেকে। এতেও শিরায় টান ধরার সমস্যা বাড়ে। আবার হার্টের অসুখ, কিডনির রোগ, পারকিনসন্স ডিজ়িজ় ডায়াবিটিস, লিভার সিরোসিসের মতো রোগ থাকলেও পায়ের শিরায় টান ধরার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ক্যানসার চিকিৎসায় যাঁদের কেমো নিতে হয় তাঁদের পেশি ও স্নায়ুর উপরে চাপ বাড়ে। ফলে শিরায় প্রদাহ, ব্যথা, টান ধরার মতো সমস্যা বেড়ে যায়।
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ভিটামিন কে২ সাপ্লিমেন্ট যদি নিতে হয়, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো নেওয়াই ভাল। না হলে রোজের ডায়েটে রাখতে হবে কয়েকটি খাবার, যেমন— পালং শাক, ব্রোকোলি, বাঁধাকপি, গাজর, সয়াবিন, কড়াইশুটি, ডিম, চর্বি ছাড়া মুরগির মাংস। ডালিমেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে থাকে। নিয়মিত ডালিমের রস খেতে পারলেও উপকার পাওয়া যাবে।
পায়ের শিরায় টান ধরার সমস্যা যদি ঘন ঘন হয়, তা হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। যদি দেখেন টান ধরার পর পায়ের পেশি মারাত্মক ভাবে ফুলে উঠছে এবং সেখানকার ত্বকের রং বদলে যাচ্ছে, তা হলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।